নওগাঁয় কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে প্রশাসন

নওগাঁয় কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে প্রশাসন

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নওগাঁয় শুরু হয়েছে সরকার ঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নওগাঁয় মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিজিবি।

কঠোর বিধিনিষেধ সফল করতে জেলা প্রশাসনের ৩৪টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ব্যাটারী চালিত অটোচার্জার, চার্জার ভ্যান চলাচল করতে দেখা গেছে।

এছাড়াও যারা অযথা রাস্তাঘাটে চলাচল করছে তাদের পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। বন্ধ আছে সকল ধরনের দোকানপাট, শপিংমল ও বিপনি বিতান।

শুরু থেকে আজ পর্যন্ত নওগাঁয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। মোট আক্রান্ত হয়েছে ৫হাজার ৬ শ’ ২৬ জন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ দিন লকডাউন শিথিলের পর করোনা সংক্রমণ রোধে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন)।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নওগাঁয় কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার দায়িত্ব পালন করছে।

শহরের তাজের মোড়ে পথচারী রুবেল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার ছোট ছেলে খুব অসুস্থ তাই বাধ্য হয়ে ওষুধ নিতে এসেছি। এসে দেখি রাস্তাঘাট ফাঁকা। ওষুধ নিয়েই বাড়ি ফিরে যাব।

শহরের রুবির মোড়ে রিকশাচালক মো. মুন্টু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বাপো পেটের দায়ে রাস্তাত বের হছি। গরীব মানুষ রিকশা না চালালে খামু কি। ভয়ও লাগিচ্ছে যদি পুলিশ ধরে। তারপরও অনেকে তো জরুলি কামোত বের হয়। তারকোক রিকশাত লিচ্ছি। তয় ভাড়া বেশি মারবার পারিচ্ছিনা বাপো। যেডাই হয় সেডাই লিয়া সন্ধ্যাত বাড়িত যামু। 

এদিকে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে জেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া, বিপিএম। এসময় পুলিশ সদস্যদের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে বিভিন্ন দিক দির্দেশনা প্রদান করেন। সেই সাথে রাস্তায় চলা চলকারী পথচারিদের খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানান।

পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া জানান, সরকার যতদিন চাইবে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কাজ করে যাবে। জনগণের কথা ভেবেই সরকার আবারও কঠোর লকডাউন দিয়েছেন। রাষ্ট্র জনগণের জন্য কাজ করেন, জনগণের ভালোর জন্যই কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

সকাল থেকেই পুরো জেলায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার সকল থানার ওসিদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে। জেলায় পুলিশের ১১ শ’ পুলিশ সদস্য কাজ করছে লকডাউন বাস্তবায়নে। এছাড়া ১৫০ জন পুলিশ রিজার্ভ রয়েছে।

১৪দিনের কঠোর লকডাউন পালনে পুলিশ মাঠে থাকবে। লকডাউন বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন পুলিশ সুপার। উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ রোধে শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ (লকডাউন) চলছে। চলবে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password