টুইন টাওয়ার হামলার পর বদলে গেল পৃথিবী, কি পেল আমেরিকা

টুইন টাওয়ার হামলার পর বদলে গেল পৃথিবী, কি পেল আমেরিকা
MostPlay

সময়টা ২০০১ সালের ঠিক আজকের এ দিনেই (১১ই সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ওড়া চারটি বিমান একইসাথে ছিনতাই হয়। যার প্রথম ২ টি আমেরিকার নর্থ টাওয়ারে আঘাত হানে পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ ও ৯টা ৩ মিনিটে। তৃতীয় বিমানটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে এবং চতুর্থটি সকাল ১০টা ৩ মিনিটে আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে। 

যদিও ধারণা করা হয়, ছিনতাইকারীরা চতুর্থ বিমানটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল।

এ হামলায় নিহত হয় ২,৯৯৭ জন, আহত হয় ৬,০০০ এর অধিক মানুষ এবং ধ্বংস হয়েছিল ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অবকাঠামো ও সম্পদ।

হামলার পরবর্তীতে আমেরিকার পদক্ষেপ:

9/11 এর ঐ ঘটনা নাড়িয়ে দেয় পুরো মানবজাতিকে। হামলার ওইদিনই রাত 8:30 এ জাতির উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিক ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এবং ভাষণটি দেশটির পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন তিনি। এরপর "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ" মূলমন্ত্র নিয়ে পরের মাসেই হামলার পরিকল্পনা শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় দীর্ঘস্থায়ী একটি অভিযানের কথা উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট বুশ।

হামলার অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই প্রশিক্ষণ নিয়েছে বলে একাধিক তদন্তে জানা যায়। যার জন্য দেশের সবকটা নিরাপত্তা বিভাগের সমন্বয়ে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট বুশ। পরবর্তীতে যাতে আর কোন মার্কিন নাগরিক এমন হামলায় নিহত না হন সেই উদ্দেশ্যে নেয়া হয় নানা রকম পদক্ষেপ। পরিবর্তন করা হয় অভিবাসন নীতি, সীমিত করা হয় বিদেশিদের প্রবেশাধিকার সহ নানারকম সুযোগ-সুবিধা, গঠন করা হয় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। 

পৃথিবী কি পেল:

আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালানোর মধ্য দিয়ে এই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটলেও পরবর্তীতে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায়ও সামরিক অভিযানে যায় যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে ৬০ টি দেশে এখনো অব্যাহত আছে এই যুদ্ধ। দীর্ঘ ২০ বছর চলা এ যুদ্ধে ইতিমধ্যে কত যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার কোন হিসাব নেই। প্রাণ গেছে লাখ লাখ মানুষের, ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি মার্কিন ডলারের।

২০ বছর আগে যেই তালেবানদের থেকে আফগানদের মুক্ত করতে শুরু হয়েছিল যুদ্ধ আবার সেই তালেবানদের কাছেই ফিরে গেল ক্ষমতা।

সেই সাথে পুরো পৃথিবীতে বেড়ে গেল মুসলিম বিদ্বেষ। আমেরিকায় কোনো মুসলমানের বিতর সন্দেহপ্রবণ কিছু দেখলেই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। নিউইয়র্কের জনপ্রিয় স্লোগানই হল "ইফ ইউ সি সামথিং, সে সামথিং"। অর্থাৎ, আপনার চোখে কিছু পড়লে পুলিশকে খবর দিন। মানুষ এখন বিনা কারণেই একজন অন্যজনকে সন্দেহ করে। যার ফলে ছড়িয়ে পরেছে ঘৃণার সংস্কৃতি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password