এ কেমন নির্যাতন!

এ কেমন নির্যাতন!

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সুদের টাকা আদায়ে মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের রেশ কাটতে না কাটতে আবারও আয়শা নামের আরেক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি  শিলা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত শিলা আক্তার (২০) কিশোরগঞ্জের নিকলি থানার ছাতিরচর এলাকার জুনায়েদ মিয়ার স্ত্রী।

গৃহবধূর পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরের সিনাবহ পশ্চিমপাড়া উন্দারটেক এলাকার ফজল মিয়ার বসত বাড়ির সীমানাকে কেন্দ্র করে পাশের জুনায়েদ মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত শুক্রবার বিকেলে ফজল মিয়ার স্ত্রীর আয়েশার সঙ্গে পাশের বাড়ির জুনাইদের স্ত্রী শিলার ঝগড়া হয়।

তাদের বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে জুনায়েদ ও তার স্ত্রী শিলা, সহযোগী নাসির মিয়া ও তার স্ত্রী সালেহা বেগম, আজিজ মিয়া, সাহেরা বেগম, শহরবানুসহ আরো কয়েকজন মিলে ওই গৃহবধূ আয়েশাকে টেনে নিয়ে যায়। পরে তারা গৃহবধু আয়েশাকে একটি আম গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট করে। নির্যাতনের সময় আয়েশা বেগমের মেয়ে নুপুর আক্তার এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করা হয়। এ সময় তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আয়শাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই গৃহবধূ আয়েশা বেগম বাদী হয়ে ওইদিনই কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ঘটনার পর গত বুধবার বিকালে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকে জুনায়েদকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু নির্যাতিতা গৃহবধূ আয়েশা বেগম তাদের বিচার মেনে নেননি। পরে ওই গৃহবধূ আয়েশা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলা আক্তার, জুনায়েদ, নাছির মিয়া, আজিজ মিয়া, শাহেরা বেগম, ছালেহা বেগমকে আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শিলা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে। 

নির্যাতিতা গৃহবধূ আয়েশা বেগম বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জুনায়েদ নাসির উদ্দিন, আজিজ, সালেহা, ও তাদের লোকজন আমাকে আম গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট করেছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বৈঠকে বসে ওই গৃহবধূর চিকিৎসা খরচের জন্য ৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্ত ওই গৃহবধূ বিচার না মানায় তাকে আইনের সহায়তা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। 

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password