বেনাপোল বন্দর নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ : আহত ১০

বেনাপোল বন্দর নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ : আহত ১০
MostPlay

যশোর প্রতিনিধি:- বেনাপোল স্থলবন্দরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে দফায় দফায় শত শত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষ। ১০জন শ্রমিক এতে গুরুতর আহত হয়েছে,অনেককে স্থানীয় ক্লিনিকে অপ্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণে বেনাপোল স্থলবন্দরের সকল প্রকার পণ্য আদান-প্রদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘন্টা দফায় দফায় হাতবোমা ফুটতে থাকে,যানচলাচল সহ জনশূণ্য হয়ে পড়ে বেনাপোল মহা-সড়ক,আতংকিত হয়ে মানুষ এদিক ওদিক ছুটতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বেনাপোল-শার্শা-ঝিকরগাছা থানাসহ প্রায় ৩৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে যশোর জেলা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী'র সদস্যরা বেনাপোল বন্দরে আসতে থাকে,কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় নি।

বেনাপোল পৌর এলাকা সহ বেনাপোল স্থল বন্দরে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। ঘটনা সূত্রে জানা গেছে,বেনাপোল স্থলবন্দরে রেজিঃ নং-৯২৫ এবং রেজি নং:- ৮৯১, দুটি হ্যান্ডলিং শ্রমিক সংগঠনে আ.লীগের দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি মেয়র গ্রুপ এবং অপরটি আফিল গ্রুপ। ২০১০ সাল থেকে শুরু করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে প্রায় প্রতিনিয়ত দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলে থাকে।

মেয়র গ্রুপে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন রেজিঃ নং- ৯২৫ হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক শ্রমিক নেতা ও বর্তমান পৌর কমিশনার মোঃ রাশেদ আলী এবং অপর আফিল গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছে রেজিঃ- ৯২৫ এর বর্তমান সভাপতি- মোঃ রাজু আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক-অহিদুজ্জামান অহিদ।

সোমবার(২৮ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে অতর্কিতে নিজে(কমিশনার রাশেদ) ও তার দলবল নিয়ে বেনাপোল বন্দরে ঢুকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়,এতে বন্দরের অভ্যন্তরে কর্মরত ২৫-৩০ জন হ্যান্ডলিং শ্রমিক গুরুতর জখম হয় এবং অনেকেই আহত হন।

আহত সকলকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ক্লিনিক এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাশেদ কমিশনারের বোমা ফাটানোর জবাব দিতে প্রতিপক্ষ রেজিঃ- ৯২৫ সভাপতি রাজু আহম্মেদের নেতৃত্বে বন্দরের সকল শ্রমিক বন্দরের মহা-সড়কে অবস্থান নেয়,এ সময় সভাপতি-আক্তারুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক-জাহাঙ্গীর আলম নেতৃত্বে রেজিঃ-৮৯১ এর সকল শ্রমিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেয়।

তারা রাশেদ কমিশনারের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে মূহুর্মূহ শ্লোগান দিতে থাকে। রেজিঃ- নং ৯২৫ এর সভাপতি রাজু আহম্মেদ বলেন, "রাশেদ কমিশনার একজন সন্ত্রাসী,সে মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের সন্ত্রাসী বাহিনী'র লিডার,সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো এবং শ্রমিক মহলে অসন্তষ সৃস্টি করায় তার একমাত্র কাজ, আজকের এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সে নিজে উপস্থিত থেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে,শ্রমিকের পক্ষ থেকে তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি"।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী'র নেতৃত্বে থাকা শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা-মীর আলিফ রেজা, মামুন কবির তালুকদার,উপ-পরিচালক(ট্রাফিক) বেনাপোল স্থল বন্দর, সহকারি কমিশনার(ভূমি) রাসনা শারমিন মিথি এবং পুলিশের এএসপি মোঃ জুয়েল ইমরান নাভারণ সার্কেল(যশোর) যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, বেনাপোল বন্দরে ককটেল বিস্ফোরণের খবর শুনে তারা তড়িৎ ঘটনা স্থলে পৌছান এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত প্রমান সাপেক্ষে ২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

তবে,ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত রাশেদ কমিশনারের নাম জানতে পেরেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তবে,এ ব্যপারে যে বা যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে যৌথ কর্মকর্তারা শ্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বন্দর এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী'র নিয়ন্ত্রনে এবং স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় যে সকল কর্মকর্তা অংশ নেন তারা হলেন-পুলিশের যশোর জেলা এডিশনাল এসপি সাইফুল ইসলাম,ডিবি পুলিশ(যশোর) ওসি রুপন কুমার সরকার,পিপিএম,এসআই শাহিনুর রহমান,এসআই শহিদুর রহমান,ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সুমন ভক্ত,শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মামুন খান,ওসি(তদন্ত) মোঃ তরিকুল ইসলাম,বেনাপোল পোর্টথানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ কামাল হোসেন ভূ্ঁইয়া,তদন্ত(ওসি) মোঃ গোলাম রসুল,শার্শা উপজেলার আনসার কমান্ডার-আব্দুল্লাহ আল রাসেল,বেনাপোল ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ-রতন কুমার দেবনাথ,বন্দর আনসার প্লাটুন কমান্ডার-আজাদ।

শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে পৌর এবং শার্শা আ.লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বেনাপোল পৌর আ.লীগ সভাপতি-এনামুল হক মুকুল,সাধারণ সম্পাদক-মোঃ নাসির উদ্দিন, বড়আঁচড়া আ.লীগ সভাপতি-আব্দুল হামিদ,পৌর যুবলীগ আহবায়ক-কমিশনার আহাদুজ্জামান বকুল,যুগ্ম-আহবায়ক-জসিম উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি-জুলফিকার আলী মন্টু,সাধারণ সম্পাদক-মোঃ কামাল হোসেন, যশোর জেলা শাখার যুব মহিলালীগ সাধারণ সম্পাদক-শামীমা সালমা আলম,পৌর যুব মহিলা লীগ নেতৃ-জান্নাতুল ফেরদৌস রোজী, শার্শা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক-ইকবাল হোসেন রাসেল,পৌর ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি- আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক-তৌহিদুল ইসলাম, দিঘীরপাড় আ.লীগ নেতা-মাইদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা-নাজিম উদ্দিন রাব্বি সহ আ.লীগ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password