হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশের জন্য নির্মাণাধীন আধুনিক থানা ভবনে মাটি দিয়ে টাইলস বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা কামাল নিয়াজ পার্ক ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৫ হাজার ১২৫ টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবন নির্মাণ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। নতুন থানা নির্মাণে বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর।
সরেজমিন দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার নবনির্মিত ভবনের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। উদ্বোধনের আগেই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুরো ভবনের অনেক জায়গায় পিলারে ধরেছে ফাটল, অন্যদিকে ফ্লোরে টাইলস লাগানো হচ্ছে সিমেন্টে-বালির বদলে মাটি দিয়ে। এমন টাইলসের জোড়া কয় দিন টিকবে ভাবাই যায় না। টাইসল মিস্ত্রির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৫ হাজার স্কয়ার ফিট টাইলসের কাজ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে মাটি দিয়ে টাইলস লাগানোর কাজ হাতেনাতে ধরেন হাইওয়ে থানার ওসি মাইনুল ইসলাম।
এছাড়াও ভবন নির্মাণে নিম্নমানের রড-ইট ব্যবহার করার খবরও পাওয়া গেছে। হাইওয়ে পুলিশের ভবন নির্মাণে এমন অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। টাইলস মিস্ত্রি রায়হান বলেন, ঠিকাদারের কথা অনুয়ায়ী কাজ করছি। ঠিকাদার যেভাবে বলবে আমার তো সেভাবেই কাজ করতে হবে।
ঠিকাদারের ম্যানেজার সামছুল করিম টাইলস মাটি দিয়ে লাগানোর বিষয়ে বলেন, টাইলস লাগানোর জন্য বালি রাখা আছে। মিস্ত্রি কেন মাটি দিয়ে লাগালেন তা বোধগম্য নয়। অভিযোগ পেয়েছি, সব উঠিয়ে নতুন করে বসানো হবে। ইতোমধ্যেই টাইলস মিস্ত্রিকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে।ফাটলের বিষয়ে তিনি বলেন, রোদ আর বৃষ্টির কারণে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবন বুঝিয়ে দেয়ার সময় সব ঠিকঠাক করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন, ভবনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে এসে দেখি টাইলস বসানো হচ্ছে বালি-সিমেন্টের বদলে মাটি দিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে কাজ বন্ধ করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষকে জানিয়েছে। এ বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
সিলেট রেঞ্জের হাইওয়ে পুলিশের এএসপি শহিদউল্লাহ বলেন, নির্মাণাধীন থানা ভবনের কাজে অনিয়মের বিষয়টি সদর দপ্তরে জানানো হয়েছে। ঠিকাদার বলেছেন সব ঠিকঠাক করে দিবেন। আর যেহেতু ভবন এখনো আমরা বুঝে নেইনি তাই ভবন বুঝে নেয়ার আগে সব ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে শুনেই নেব।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ও হাইওয়ে থানার নির্মাণাধীন ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসও) মাহবুবুল আলম শামীমকে ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি অসুস্থ পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন