মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আটক করা দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ অন্যান্য বেসামরিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গতকাল শুক্রবার একটি ঐক্যমত্য প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ২৪ এ খবর জানিয়েছে।
মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি বিশেষ অধিবেশনে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উপস্থাপিত মূল প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।কোনো বিরোধিতা ছাড়াই প্রস্তাবটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে পাস হওয়ার পর, চীনা রাষ্ট্রদূত চেন জু বলেন, ‘আমাদের সুপারিশগুলো গ্রহণ করার জন্য অংশীদারদের ধন্যবাদ।’ তবে চীন এখনো এই পদক্ষেপ থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া সর্বসম্মতিতে গৃহীত এ প্রস্তাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি চীন ও রাশিয়া।কাউন্সিলের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা না থাকলেও তারা অধিকার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।বিশেষ অধিবেশন চলাকালে মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রস্তাবে বলা হয়, ‘মিয়ানমারে যাদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের ছেড়ে দেওয়াসহ নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক কাউন্সিলের গৃহীত এই প্রস্তাবকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো যে ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দৃঢ়ভাবে কথা বলবে (মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে)’।
‘বাহিনীর অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, গোলাবারুদ ব্যবহার—এগুলো সবই অগ্রহণযোগ্য,’ বলেন তিনি।এর আগে মিয়ানমারে সম্প্রতি সামরিক অভ্যুত্থান এবং স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ অন্যান্য প্রবীণ রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশটির সামরিক জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বুধবার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন জানান, তিনি এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশ জারি করছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মিয়ানমার সরকারের ১০০ কোটি ডলারের তহবিল ব্যবহার করতে পারবেন না মিয়ানমারের জেনারেলরা।শিগগিরই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে দখল করা ক্ষমতা ত্যাগ এবং বার্মার মানুষের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা উচিত,’ বলেন বাইডেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘নতুন এ নিষেধাজ্ঞা তাঁর প্রশাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ জব্দ করার অনুমতি দেবে, যা মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের সহায়তা করত। তবে স্বাস্থ্যসেবা, নাগরিক সমাজ ও মিয়ানমারের জনগণ সরাসরি উপকৃত হয়, এমন খাতগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বাইডেন আরো জানান, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে নিষেধাজ্ঞার নির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করার পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন প্রশাসনের।গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন