করোনা টিকা রফতানির অনিশ্চয়তা জানালেন সেরাম ইনস্টিটিউট

করোনা টিকা রফতানির অনিশ্চয়তা জানালেন সেরাম ইনস্টিটিউট

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেকটা ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ভারতে। এ অবস্থায় টিকা নিয়ে দুঃসংবাদ দিল সেরাম ইনস্টিটিউট। আগামী তিন মাসের মধ্যে টিকা রফতানির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনেওয়ালা। বুধবার (২১ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, করোনা টিকা রফতানির কোনো নিশ্চয়তা নেই এবং এই মুহূর্তে আমরাও মনে করছি, এমন সংক্রমণের সময়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আমাদের রফতানির দিকে তাকানো উচিত হবে না। সিরাম প্রধান বলেন, আগামি জুন-জুলাই মাসে আমরা আবারও সামান্য পরিমাণে টিকা রফতানি শুরু করতে পারি। তবে এই মুহূর্তে আমরা দেশকেই অগ্রাধিকার দেব।

আগামি ১ মে থেকে ভারতে নতুন ধাপে শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। সেখানে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকেই টিকা দেয়া হবে। এ জন্য প্রতি মাসে দেশটিতে আরও ২০ লাখ ডোজ বেশি প্রয়োজন পড়বে। তবে এই টিকার প্রয়োজন সিরামের কাছে অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, টিকা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভারত সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি রুপি চেয়েছিলেন সেরাম প্রধান আদর পুনেওয়ালা। কিন্তু অর্থ এখনও তার হাতে পৌঁছায়নি।

এ বিষয়ে আদর পুনেওয়ালা বলেন, আমরা মিডিয়াতে অনেকবার দেখেছি তিন হাজার কোটি রুপি মঞ্জুর হয়েছে। আমরা আশা করছি এটি শিগগিরই আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। তবে আমরা এই অর্থের জন্য অপেক্ষা করে নেই, টিকার উৎপাদন বাড়াতে ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করেছি। আশা করছি, এই সপ্তাহেই ওই অর্থ সরকার থেকে আমাদের কাছে পৌঁছাবে।

সেরামের আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয় হচ্ছে টিকার কাঁচামাল সংগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। চলতি সপ্তাহেই সিরাম প্রধান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে টুইটের মাধ্যমে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন তবে তাতেও কাজ হয়নি। সিরামপ্রধান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার মিডিয়ার মাধ্যমে সাড়া দিয়েছে। আমরা খবরে তাদের বলতে দেখেছি, তারা বিষয়টিতে অবগত এবং পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন। তারা বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু এখনও কাঁচামাল রফতানি চালু হয়নি।

তিনি জানান, কাঁচামালের রফতানি বাধায় ভারতে কোভিশিল্ডের উৎপাদন বা দামে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে কোভ্যাক্সের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এটি ভারতের বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে। আদর পুনেওয়ালা বলেন, আমাদের টিকার দামের ওপর এটির প্রভাব পড়বে না। কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজে নিতে পারব। এতে শুধু একটু বেশি সময় লাগবে। তাতে কোভ্যাক্স মজুতে বাধা পড়তে পারে, সৌভাগ্যবশত কোভিশিল্ডে নয়।
 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password