অগ্রিম টাকা নিয়েও মাদক না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে খুন

অগ্রিম টাকা নিয়েও মাদক না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে খুন

অগ্রিম টাকা নিয়ে মাদক সরবরাহ করতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় নাজু মিয়া নামের মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছেন রাসেল মিয়া নামের আরেক মাদক ব্যবসায়ী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। এ ঘটনায় রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। রাসেল আখাউড়া উপজেলার নয়ামুড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিবিআই কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বছরের ২৪ জুলাই দুপুরে আখাউড়ায় ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন জমিতে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। এই খবর পেয়ে জানায় মরদেহটি আবুল হোসেনের ছেলে নাজু মিয়ার। আখাউড়া থানায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা দায়েরের পর ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর নিহত নাজুর বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের আদেশ দেন।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন সার্বিক তদারকিতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত শেষে দীর্ঘ আট মাস পর নিবিড় তদন্তে বের হয়ে আসে আলোচ্য নাজু মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় রাসেল মিয়া (২৭) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে।

জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানান, নাজু মিয়াকে ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাদক ক্রয় ও পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতেন রাসেল মিয়াসহ স্থানীয় একটি মাদক চোরাচালান চক্র। ঘটনার কিছু দিন পূর্বে নিহত নাজু মিয়া অগ্রিম টাকা নিয়ে মাদক সরবরাহ করেননি। তাই মাদক চোরাচালানের তথ্য পুলিশের কাছে ফাঁস করে দিতে পারে এ সন্দেহে রাসেল মিয়া ও তার সহযোগীরা নাজু মিয়াকে ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন জলাভূমিতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এরপর নাজুর মরদেহ ফেলে দিয়ে তার মোবাইলটি সঙ্গে নিয়ে যান তারা। এরপর কিছুদিন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে থাকেন রাসেল।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আকস্মিক অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নাজু মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি উদ্ধার করে এবং সেটের ব্যবহারকারী রাসেল মিয়াকে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সন্দেহে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রাসেল মিয়া ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং ঘটনায় জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করেন।

পিবিআইয়ের কাছে তদন্তাধীন মামলাটি পরবর্তীতে আদালতে আবেদনের মাধ্যমে জিআর মামলায় রূপান্তরিত হয়। গ্রেফতারকৃত রাসেল মিয়া গতকাল রোববার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, নিহত নাজুর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। তারা একই সঙ্গে মাদক ব্যবসা করতেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password