ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরগরে কবর খুঁড়ে লাশ বের করার অজুহাতে বিরল প্রজাতির একটি প্রাণীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সাবেক ইউপি সদস্য রহমত আলীর বাড়ির পাশে একটি পুকুরে স্থানীয়রা প্রাণীটিকে হত্যা করে। খবর পেয়ে অপরিচিত এই প্রাণীটিকে দেখতে সকাল থেকে ইউপি সদস্যের বাড়িতে আশপাশের মানুষ ভিড় করছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ভোরে রহমত আলীর বাড়ির আঙিনায় বন্য প্রাণী গন্ধগোকুলকে দেখে স্থানীয় লোকজন আদমখুর এসেছে, আদমখুর এসেছে বলে চিৎকার শুরু করে। কবর থেকে লাশ তুলে খায় এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে গন্ধগোকুলটিকে তাড়া করলে প্রাণ ভয়ে সেটি পানিতে পড়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা গন্ধগোকুলটিকে পিটিয়ে মেরে একটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানায়, এটি একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। এই প্রাণীটি ইন্ডিয়ান পাম সিভেট বা গন্ধগোকুল নামেই পরিচিত। এটি মাংসাশী প্রাণী না, ফলমূল ও পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এটি পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
স্থানীয়দের দাবি, কবরস্থানে নতুন নতুন লাশ দাফন করা হলে রাতের আঁধারে সেটি তুলে খেয়ে ফেলে প্রাণীটি। গত তিন মাসে পাঁচ থেকে ছয়টি লাশ কবর থেকে তুলে খেয়েছে এই প্রাণী। শনিবার হযরত আলী নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তাকে দাফন করা হলে রোববার সকালে এই প্রাণীটিকে কবরের মাটি খুঁড়তে দেখলে স্থানীয়রা সেটিকে পিটিয়ে হত্যা করে।
নাসিরনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, এ প্রাণীটি কখনোই মাংসাশী না। প্রাণীটা গন্ধগোকুল নামেই পরিচিত। এটি ফলমূল, ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। স্থানীয়রা হয়তো আতঙ্কিত হয়ে এবং ভুল ধারণা থেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীটিকে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ যদি আগে থেকে খবর পেত তাহলে সেটিকে জীবিত উদ্ধার করতো।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন