বিষহীন সাপ অজগর। কিন্তু তারপরও এটি মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে। কারণ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপ এটি। অথচ অজগরের উৎস ইতিহাস প্রায় অজানা। এতদিন মনে করা হতো দক্ষিণ গোলার্ধের কোনো অঞ্চলে অজগরের আবির্ভাব ঘটেছিল প্রথম। তবে সেই ভাবনা ভুল প্রমাণ করেছে সম্প্রতি জার্মানিতে আবিষ্কৃত ৪টি জীবাশ্ম।
জার্মানির দক্ষিণ অঞ্চলের মেসেল পিট ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এই সাইট থেকেই উদ্ধার করা হয় অজগরের জীবাশ্মগুলো। সেনকেনবার্গ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদের মতে, জীবাশ্মগুলো অজগরের সবচেয়ে প্রাচীন নমুনা। আর এর বয়স ৪ কোটি ৭০ লাখ বছর। পুরাতত্ত্ববিদরা এগুলোকে প্রাচীন অজগরের একটি নতুন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। নতুন এই অজগর প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে মেসেলোপাইথন ফ্রেই।
এর আগে অজগরের সবচেয়ে প্রাচীন যে নমুনাটি পাওয়া গিয়েছিল, সেটির বয়স ছিল ২ কোটি বছরের কিছু বেশি। ওই নমুনাটি পাওয়া গিয়েছিল ব্রাজিল থেকে। এছাড়া দক্ষিণের অরণ্য অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি অজগর দেখা যায়। ফলে ধারণা করা হয়েছিল হয়তো দক্ষিণ গোলার্ধেই অজগরের আবির্ভাব হয়েছিল। জার্মানি থেকে প্রাপ্ত এই জীবাশ্ম সেই হিসাব ওলটপালট করে দিয়েছে। যদিও এখনও যথেষ্ট নমুনার অভাবে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, কীভাবে এবং কোথায় আবির্ভাব হলো এই সাপের।
সেনকেনবার্গ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পুরাতত্ত্ববিদ এবং এই গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ক্রিস্টার স্মিথ বলেন, ‘এখনও এমন কোনো প্রাথমিক জীবাশ্ম পাওয়া যায়নি যা উত্তর এবং দক্ষিণ গোলার্ধের উৎসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। কিন্তু আমাদের আবিষ্কার করা নতুন জীবাশ্মগুলো প্রাচীনতম অজগরের নমুনা এবং এগুলো উত্তর গোলার্ধে (ইউরোপে) অজগরের আবির্ভাবের প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
অন্যান্য অজগরের তুলনায় মেসেলোপাইথন ফ্রেই প্রজাতির অজগরের দৈর্ঘ্য বেশ কম। মাত্র ৩.২ ফুট। প্রাচীন এই অজগরের কঙ্কালে পাওয়া গেছে ২৫৫টি হাড়। আধুনিক সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অজগরের বসবাস রয়েছে। তবে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াতে এদের বেশি দেখা যায়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন