নোয়াখালীতে মেয়েকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় মাকে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত নারীর নাম জোবেদা খানম (৫৫)।শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকালে নোয়াখালী পৌরসভার উত্তর মাইজদী গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় আহত নারী বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে আহত নারীর অভিযোগ।
সুধারাম মডেল থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই নারীর এক মেয়ে (২৫) কে দীর্ঘদিন ধরে উত্তর মাইজদী গ্রামের মৃত নুরুল হকের ছেলে আবদুল কাইয়ুম (৪৮) উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মেয়েটি বরাবরই তার কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। শনিবার বিকাল ৩টার দিকে ওই নারী ও তার মেয়ে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হওয়ার পর বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর পৌঁছালে আবদুল কাইয়ুম নারীর মেয়েকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে আবদুল কাইয়ুম নারীর মেয়ের ওড়না ধরে টান দেন। এতে তিনি (নারী) প্রতিবাদ করেন।
এনিয়ে উত্যক্তকারীর সঙ্গে মা মেয়ের বাক বিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আবদুল কাইয়ুমের সহযোগী মো. জুয়েল মোবাইল ফোনে আরো ৭-৮ জনকে ডেকে ঘটনাস্থলে আনেন। একপর্যায়ে আবদুল কাইয়ুম ওই নারীর চুলের মুঠি ধরে প্রকাশ্যে রাস্তার উপর টেনে হিঁচড়ে মাটির ওপর পেলে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মেরে আহত কর।
এসময় হামলাকারীরা তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করে। আসামিরা মা-মেয়েকে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মা মেয়েকে এডিস নিক্ষেপ করার হুমকি দিয়ে যায়। এঘটনায় ওই পরিবারটি আতংকের মধ্যে রয়েছে।
আহত নারীর মেয়ে (২৫) বলেন, আমার স্বামী সৌদি প্রবাসী হওয়ায় আমি আমার মায়ের সাথে থাকি। দীর্ঘদিন থেকে আমাদের প্রতিবেশী আবদুল কাইয়ুম আমাকে নানাভাবে উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। আমি তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মা ও আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমাদেরকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি আরও বলেন এঘটনায় পুলিশ শনিবার বিকালে উত্যক্তকারী আবদুল কাইয়ুমকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও রহস্য জনকভাবে তিনি ছাড়া পেয়ে যান। এ অবস্থায় তারা মা-মেয়ে নিরাপত্তারহীনতায় ভুগছেন।
এব্যপারে হামলাকারী আবদুল কাইয়ুমের সঙ্গে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রায়হান নামের এক যুবকের সাথে পানি সেচ দেওয়াকে কেন্দ্রকরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি কোন নারীর গায়ে হাত তুলেননি বলে দাবি করেন।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রফিকুল বারী আলমগীর বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলা-পালটা হামলার ঘটনা ঘটে।
সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. শাহেদ উদ্দিন বলেন, নারীকে মারধর কিংবা শ্লীলতাহানির কোন ঘটনা ঘটেনি। এটা জমি সংক্রান্ত বিরোধ। এঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ অভিযোগগুলো তদন্তকরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন