নওগাঁর রানীনগরে গৃহবধূ আত্মহত্যার প্ররোচনায় তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে তার শাশুড়ি কিরন বিবিকে (৫০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, নিহত গৃহবধূ শিউলি বিবির (১৯) মা দোলা বেগম বাদী হয়ে সোমবার (৫ এপ্রিল) রাতে থানায় মামলা করেন। ওইদিন রাতেই তার শাশুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে আবুল হোসেনের ছেলে সুমন আলীর (২২) সঙ্গে শিউলির বিয়ে হয়। গত কয়েক মাস আগে থেকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সুমনের পরিবারের লোকজন শিউলিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এরই মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করে আপসও করা হয়।গত ৪ এপ্রিল শিউলি তার ননদের মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যায়। অনুষ্ঠানে স্বামী সুমন অকারণে শিউলিকে মারপিট করে। পরদিন দুপুরে বাড়ি আসার পর কোনো কারণ ছাড়াই আবারও নির্যাতন করা হয়। ক্ষোভের বসে কীটনাশক পান করেন শিউলি। অসুস্থ হয়ে পড়লে শিউলিকে উদ্ধার করে প্রথমে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে পরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। সুমনের পরিবারের সদস্যরা নিহত শিউলির মরদেহ হাসপাতালে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। মরদেহ রেখে পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহের দানা বাঁধে।নিহত গৃহবধূ শিউলির মা দোলা বেগম বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে অনেক টাকা-পয়সা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরও অকারণে মেয়ে নির্যাতন করা হতো। তারা মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে মুখে বিষ দিয়ে দিয়েছে যেন মারা যায়। তা না হলে কেন তারা মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাবে।’
মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ বলেন, ‘গৃহবধূ শিউলি আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মা দোলা বিবি বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়িসহ পাঁচজনকে এজাহারনামীয় আসামি করে মামলা করেন। এছাড়া অজ্ঞাত আরও চারজন-পাঁচজন আসামি রয়েছে। মামলার পর গৃহবধূর শ্বাশুড়িকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন