দিনাজপুরে বর্ষণ ও উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল

দিনাজপুরে বর্ষণ ও উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল
MostPlay

গত কয়েকদিনের উজানের ঢল ও বর্ষণের ফলে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এদিকে জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি বিপদসীমায় উঠানামা করছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন,দিনাজপুর জেলায় ভারী বর্ষণের আভাস না থাকলেও হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। উজান থেকে নেমে আসা পানির ফলে বুধবার দুপুর থেকে জেলার প্রধান ৩টি নদী পুনর্ভবা, আত্রাই ও ছোট যমুনার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বুধবার সন্ধ্যার পরপরই জেলার আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে।

পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই এই নদীর তীরবর্তী এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু আবাদি জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদরের দিঘন, সাহেবগঞ্জ, দপ্তরীপাড়া, চিরিরবন্দর উপজেলার তালপুকুর বানিয়াপাড়াসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়ায় অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন এই এলাকার মানুষ। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার মাদারগঞ্জ বাজারের ফিরোজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় বেশ কিছু নদীর ধারের এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর আগে এভাবে কখনো নদী ভাঙেনি। শহীদ জমিরউদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এবারে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নদীর পার্শ্বে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

আমার চাচার বেশ কয়েকটি লিচু গাছ ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। দিনাজপুর শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর পাশে অবস্থান করা অনেক পরিবারই পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পূর্ব দপ্তরীপাড়ার রফিকুল ইসলাম বলেন, এই এলাকায় বাড়িঘর অল্পতেই ডুবে যায়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আমরা বাড়ির জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে, পানি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার মাহাবুব আলম জানান, আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

এই বিপদসীমা ৩৯ দশমিক ৫০০ মিটার থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৪০ দশমিক ১৯০ মিটার। পুনর্ভবা নদীর পানি বিপদসীমা ৩৩ দশমিক ৫০০ মিটার থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৩২ দশমিক ০৬০ মিটার। ছোট যমুনার বিপদসীমা ২৯ দশমিক ৬৫০ মিটার থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ২৬ দশমিক ৩৬০মিটার।

গত ১২ ঘন্টার ব্যাবধানে এসব নদীর পানি বেড়েছে। তিনি আরও জানান, ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত বেশি হলে দিনাজপুর জেলার নদনদীগুলোর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা আরও বাড়বে। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুর জেলায় কোন ভারী ধরনের বর্ষণের সম্ভাবনা নাই। তবে হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password