যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কড়া হুমকি দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। তিনি বলেন, ‘আগামী চার বছর যদি ভাল থাকতে চান, তাহলে এমন কিছু করবেন না, যাতে আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়।’
বাইডেন প্রশাসনের দু’জন প্রভাবশালী কর্মকর্তা এখন দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফরে রয়েছেন। এরা হলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই সফরগুলোকে ভাল চোখে দেখছে না পিয়ংইয়ং। তাই কিমের বোন এবং রাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি কিম ইয়ো জং এমন আগুনঝরা হুমকি দিলেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র রোদোং সিনমুনে মঙ্গলবার তার এই বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাপান পৌঁছান। ক্ষমতায় আসার পর এটাই তাদের প্রথম বিদেশ সফর। উদ্দেশ্য চীনের বিরুদ্ধে সামরিক জোটবদ্ধতা এবং একই সঙ্গে পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ প্রচেষ্টার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা। এরই প্রতিক্রিয়ায় কিমের উপদেষ্টা কিম ইয়ো’র এই সাবধানবাণী। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় পালাবদলের পর নতুন প্রশাসনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া। তবে বিবৃতিতে কিম ইয়ো বাইডেন প্রশাসনের কারো নাম উল্লেখ করেননি।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া চালায়। সে সময় রোদোং সিনমুনে উত্তর কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়। সেখানে কিম ইয়ো জং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন আমাদের ভূখণ্ডে বারুদের গন্ধ ছড়াতে চাইছে। আমাদের কথা হলো, যদি আগামী চারবছর ভালভাবে থাকতে চাও, তাহলে সংযত হও। নইলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে।’
বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের সম্পর্কটা ছিল প্রচলিত ধারার বাইরে। একদিকে পরস্পরকে হুমকি ধামকি দিয়ে কাত করার চেষ্টা, অপর দিকে কূটনৈতিক বৈঠক ও আলাপ-আলোচনায় নিজেদের প্রভাব বিস্তারের উদ্যোগ। এ নিয়ে পরমাণু যুদ্ধ বেধে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির আঁচ পর্যন্ত পেয়েছিল বিশ্ব। পরে অবশ্য দু’পক্ষের লাফালাফিকেই উদ্ভট মনে হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে আগে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা বন্ধ এবং উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে আগে নিষেধাজ্ঞা অপসারণর দাবি উচ্চারিত হয়েছে বারবার। কোনো পক্ষই অবশ্য পিছু হটেনি, সামনেও এগোয়নি। পরিস্থিতিও রয়ে গেছে অপরিবর্তিত।
এরই মধ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে নিজেদের চারদিকে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে বিশ্ব থেকে কার্যত পুরোপুরিই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উত্তর কোরিয়া।’
জানুয়ারিতে বাইডেনের অভিষেকের কদিন আগে কিম জং উন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সবচেয়ে ‘বড় শত্রু’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করার কথা ঘোষণা করে। এরপর পিয়ংইয়ং তাদের সামরিক কুচকাওয়াজে সাবমেরিনচালিত একটি নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা চালায়।
মধ্য ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে কথাবার্তা চালানোর চেষ্টা চালিয়েছিল। তবে তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে সোমবার সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র জালিনা পোর্টার।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন