ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে মায়ের ঘর ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার দখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলে বাধা দিলে মাকে ছেলের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেন মা আলেয়া বেগম। ঘর দখল ও মারধরের অভিযোগ এনে মা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আমতলী পৌরসভার কাঠপট্টি এলাকায় শুক্রবার সকালে।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৬ সালে কাঠ ব্যবসায়ী মোক্তার আলী হাওলাদার তার স্ত্রী মোসা. আলেয়া বেগমের নামে একটি দোকান ঘর লিখে দিয়ে মারা যান। তার মৃত্যুর পরে ওই দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত বছর ওই দোকান ঘর তিনি তার ছোটছেলে খোকন হাওলাদারের কাছে ১ হাজার ৫শ' টাকায় মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেন।
এ নিয়ে বড়ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদারের সঙ্গে তার কথাকাটাকাটি হয়। এতে ওই ঘর নিয়ে মা ও দুই ভাইয়ের মধ্যে একাধিক মামলা রয়েছে। বড়ভাই জাহাঙ্গীর হাওলাদারের গত বছরের করা মামলায় ছোটভাই খোকন হাওলাদার গত মার্চ মাসে জেলহাজতে যান। ১৫ দিন হাজতবাস শেষে গত ১৬ মার্চ তিনি জামিনে আসেন।
ছোটভাই জেলহাজতে থাকার সুবাদে বড়ভাই জাহাঙ্গীর হাওলাদার ছোটভাইয়ের দোকানের মালামাল লুট করে নেয়- এমন অভিযোগ ছোটভাই খোকন হাওলাদারের। শুক্রবার সকালে বড়ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার ৮-১০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে মা আলেয়া বেগমের ঘর দখল করে নেন। খবর পেয়ে মা আলেয়া বেগম ঘটনাস্থলে এসে বাধা দেন। এতে ছেলে জাহাঙ্গীরের সামনেই ভাড়াটে সন্ত্রাসী রশিদ খান ও সিদ্দিক খান বৃদ্ধা আলেয়া বেগমকে চড়-থাপ্পড় মারে। এমন অভিযোগ মা আলেয়া বেগমের।
এ ঘটনায় ওই দিন সকালে মা আলেয়া বেগম বড়ছেলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মা আলেয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মোর পোলায় মোরে সন্ত্রাসী আইন্না মারছে। পোলায় খাড়াইয়্যা খাড়াইয়্যা দ্যাখছে। হে কিছুই কয় নাই।
তিনি আরও বলেন, মোর বড় পোলায় মোর ঘর দখল কইরা নেছে। ওই ঘর মুই ছোড পোলাডারে ভাড়া দিছি। ওই ঘরে মোর ছোড পোলার গাছ আলহে, হেও লইয়্যা গ্যাছে। মুই এইয়্যার বিচার চাই। জাহাঙ্গীর হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদার বলেন, দাদিকে কারা যেন মারধর করেছে বলে শুনেছি।
খোকন হাওলাদার বলেন, মায়ের কাছ থেকে আমি ঘর ভাড়া নিয়েছি। ওই ঘরে আমি কাঠ রেখে ব্যবসা করে আসছি। ৮-১০ জন সন্ত্রাসী এনে ওই ঘর আমার ভাই দখল করে আমার সমুদয় মালামাল লুট করে নিছে। তিনি আরও বলেন, মা দখলে বাধা দিতে গেলে তাকে সন্ত্রাসীরা মারধর করেছে। ওই সময় আমার ভাই ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। সে কিছুই বলেনি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হাওলাদার মুঠোফোনে মাকে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, মা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মা বুড়ো মানুষ মাথা ঠিক নেই। প্রায়ই আবোল-তাবোল বলে। আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন