জোর করে করোনায় মৃত শিশুর লাশ দাহ, মুসলিমদের ক্ষোভ

জোর করে করোনায় মৃত শিশুর লাশ দাহ, মুসলিমদের ক্ষোভ

করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ২০ দিন বয়সী এক মুসলিম শিশুকে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পুড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। গত সপ্তাহে নির্মম এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।দেশটির আইন অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে দাহ করতে হবে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায় সমাহিত এবং দাহ করা উভয় পদ্ধতিকেই সমর্থন করা হয়েছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় শ্রীলঙ্কার মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবাইয়া রাজাপাকসের সরকার মুসলমানদের ধর্মীয় স্পর্শকাতরতাকে অবজ্ঞা করছে।

জানা যায়, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া ১০৭ জন মুসলিমের মরদেহ দাহ করা হয়েছে। সর্বশেষ শায়খ নামের শিশুটির মরদেহও বাবা-মায়ের তীব্র অনিচ্ছা সত্বেও পুড়িয়ে ফেলা হয়।

ওই শিশুটির বাবা এমএফএম ফাহিম আল জাজিরাকে জানান, ছোট্ট শিশুকে পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য দেখার মতো সাহস ছিল না বিধায়, সন্তানের শেষ বিদায় আয়োজনে অংশ নিতে পারেননি তিনি।

‘আমি তাদের বলেছি, যেখানে আমার সন্তানকে পোড়ানো হবে সেখানে আমি উপস্থিত হতে পারব না। আমরা আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেছিল, অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া কীভাবে তাদের সন্তানকে পোড়ানোর মতো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

ফাহিম আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাই তাকে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এ কারণে তারা আমার সন্তানকে তাড়াহুড়ো করে পুড়িয়ে ফেলতে ছুটে যায়। আমরা যখন প্রশ্ন করেছি, আপত্তি জানিয়েছি, তারা আমাদের সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেনি।

‘জোরপূর্বক না পুড়িয়ে তারা যদি আমাদের দাফন করার সুযোগ দিত তাহলে অন্তত শান্তি পেতাম। আল্লাহর বান্দা আল্লাহ নিয়ে গেছে, আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু তারা তো ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফনই করতে দেয়নি। বরং বর্বরভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সরকারের আচরণ মেনে নিতে পারছি না।’ বলেন ফাহিম।

যেখানে তাকে দাহ করা হয়েছিল, সেখানে রোববার স্থানীয় মুসলিমরা দলে দলে হাজির হয় এবং তার গেটে সাদা ফিতা টানিয়ে দেয়। প্রতিবাদ জানাতে শ্রীলঙ্কাজুড়ে অনেক মুসলিমই তাদের বাড়ির দরজা ও জানালায় সাদা ফিতা ঝুলিয়ে রাখে।

এছাড়া, দেশটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ‘স্টপ ফোর্সড ক্রিমেশন’ হ্যাশট্যাগ লিখে প্রতিবাদ চলছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password