ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত কৃষকের নাম ফরজুল ইসলাম (৩০)। তিনি উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের কাঁটাবাড়ি এলাকার মৃত ফজর আলীর পুত্র। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ঈদের দিন শনিবার বিকেল ৫টার দিকে গাবরাখালী সীমান্তবর্তী এলাকায় ফসলি জমিতে একদল বন্য হাতি ধান খেতে নামে। এ সংবাদ পেয়ে ধানক্ষেত বাঁচাতে গ্রামবাসী সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে হাতি তাড়াতে লাঠি-মশাল নিয়ে ধাওয়া করে। এ সময় কৃষক ফরজুল ইসলাম হাতির খুব কাছে চলে গেলে একটি হাতি তাকে ধাওয়া দিয়ে পায়ে পিষ্ট করে।
এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় গাজিরভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, 'কৃষক ফরজুল ইসলাম কিছু জমি বর্গা নিয়ে সীমান্তে চাষ করে আসছিলেন। হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিনি ২ সন্তানের জনক ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারটি আজ উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারাল।
হাতি প্রায় সময় আমাদের এলাকায় ফসলি জমিতে প্রবেশ করে ধান নষ্ট করে। আমরা দাবি জানাই, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পায়।' হালুয়াঘাট থানার ওসি মো. শাহিনুজ্জামান খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'আমরা বিষয়টি শোনার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। থানা পুলিশ এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
স্থানীয়রা অভিযোগ জানিয়ে বলে, চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল পার্শ্ববর্তী ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর রাণীপুর গ্রামে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে সুমন মিয়া নামে এক কিশোর নিহত হয়। গেল বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর হালুয়াঘাট উপজেলার কড়ইতলী গ্রামের কৃষক নওশের আলী হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত হন।
এর ৫ দিন পর ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ফসলি জমি রক্ষার জন্য হাতি তাড়াতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ তৈরি করে সে ফাঁদে পড়ে মৃত্যু হয় কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের। এত মৃত্যুর পরেও হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় বন বিভাগ কার্যকরী কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন