করোনাভাইরাস: চা পান কি কোনো উপকার করে?

করোনাভাইরাস: চা পান কি কোনো উপকার করে?

করোনাভাইরাসের মহামারিতে আতঙ্কিত বিশ্ব। ভাইরাসটির থাবা থেকে মানবগোষ্ঠী বাঁচাতে অত্যন্ত সময় পার করছেন গবেষকরা। টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কারে দিনরাত প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।পাশাপাশি ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে অবরুদ্ধ মানুষ ঘরবন্দি হয়েও খুঁজছেন বিভিন্ন উপায়। ফলে তথ্যের সত্যতা যাচাই না করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন নানা টোটকা। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ যে টোটকা সাড়া ফেলেছে তা হচ্ছে- নিয়মিত চা পানে নাকি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। বিশ্বাস করে ইতোমধ্যে অনেকেই নিয়মিত তিন বেলা চা পান করা শুরু করে দিয়েছেন। তবে বিষয়টির কতটা সত্যতা রয়েছে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

তারা বলছে, মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের বরাতে একটি বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে চীনা চিকিৎসক লি ওয়েনল্যাংকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে রোগীদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন লি। তার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদনও তৈরি করেছিলেন তিনি।
সেখানে তিনি দাবি করেন, থিওব্রোমাইন, থিওফাইলিন, মিথাইলজ্যান্থিন শরীরে এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। যা করোনাভাইরাসের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সক্ষম। তিনটি উপাদানই রয়েছে চা পাতায়। তাই চা পান করলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ সংক্রান্ত বার্তায় আরো উল্লেখ করা হয়, ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহানে প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করার মূলমন্ত্র ছিল এই চা। তাছাড়া সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা সুস্থ থাকতে নিয়মিত চা পান করেছেন।

ছড়িয়ে পড়া এসব বার্তায় যে ডা. লি’র কথা বলা হচ্ছে, তিনি মূলত উহান কেন্দ্রীয় হাসপাতালের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনিই প্রথম করোনাভাইরাসের আগ্রাসন সবার সামনে তুলে ধরেছিলেন। চীনা সরকারকে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সাবধানও করেছিলেন। এরপর তিনি নিজেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
তবে বিবিসি বলছে, ডা. লি করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করলেও ভাইরাস দমনে চায়ের ভূমিকা নিয়ে কোনো গবেষণা করেননি।
গণমাধ্যমটি বলছে, মিথাইলজ্যান্থিনের উপস্থিতি আছে চা, কফি ও চকলেটে। কিন্তু তা দিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ বা সহজে সেরে উঠার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
তাই বলাই যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চা পান নিয়ে যে তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে তার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password