মান্দায় আতঙ্কের আরেক নাম হাতুড়ি সোহেল

মান্দায় আতঙ্কের আরেক নাম হাতুড়ি সোহেল

ডাকাতি, চাঁদাবাজি, গভীর নলকূপের দখল নিয়ে মারামারিসহ একাধিক ঘটনায় আলোচিত ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা সোহেল রানা ওরফে হাতুড়ি সোহেল (৩৭)। সব সময় হাতুড়ি নিয়ে চলাফেরা করায় এলাকাবাসী তাকে এ নামেই চেনেন। আধিপত্য বিস্তার করতে গড়ে তুলেছেন ক্যাডার বাহিনী। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।

সোহেল রানা ওরফে হাতুড়ি সোহেল নওগাঁর মান্দা উপজেলা পরানপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত জনপদ হাটোর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। চাঁদা না পেয়ে হাটোর স্কুল বাজারের এক ব্যবসায়ীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গত মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, মোল্লা ট্রেডার্স নামে হাটোর স্কুল বাজারে তার সার ও কীটনাশকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সম্প্রতি নিজের বসতভিটায় ইট দিয়ে বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করলে হাতুড়ি সোহেল তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে নির্মাণ কাজসহ দোকানঘর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন সোহেল। একই দাবিতে গত শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে সোহেল দোকানে গিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান।

এ ঘটনায় জের ধরে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোহেল তার বাহিনী নিয়ে দোকানঘর থেকে ব্যবসায়ী মান্নানকে টেনেহিঁচড়ে বের করে হাতুড়ি দিয়ে তাকে পিটিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা মান্নানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সোহেলকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৩ মে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চকদেউলা গ্রামের মৎস্যজীবী পাড়ার জলিল হাজির বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিয়ামতপুর থানা পুলিশের হাতে ২২ মে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন সোহেল। জামিনে বেরিয়ে এসে আরো বেপরোয়া চলাফেরা শুরু করেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে গড়ে তোলেন ক্যাডার বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি হাটোর মৎস্যজীবী পাড়ার গভীর নলকূপের দখল নিয়ে সোহেল ও তার বাহিনী গ্রামের কাজী ওমর আলীকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেন। একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি হাটোর মৎস্যজীবী পাড়ার উজ্জল হোসেন নির্মম নির্যাতনের শিকার হন সোহেল ও তার বাহিনীর হাতে। এ দুটি মামলায় জেল খাটতে হয় সোহেলকে।

এ প্রসঙ্গে মান্দা উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খালেদ মোশাররফ বলেন, সংগঠন পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় সোহেল রানাকে যুবলীগের সকল পদ থেকে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া চলছে। অচিরেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, চাঁদা দাবি ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সোহেলকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password