নওগাঁর মান্দায় মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় মারপিট, আটক ১

নওগাঁর মান্দায় মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় মারপিট, আটক ১
MostPlay

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সতিহাট কে টি হাইস্কুল এ্যন্ড কলেজের একটি কক্ষে মাদক সেবন করতে না দেয়ায় শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে মারপিট করেছে ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা।

এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান মণ্ডল বাদি হয়ে তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে অভিযান চালিয়ে মামলার মূল আসামিকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের জন্য গত শনিবার রাতে প্রতিষ্ঠানে জিলাপি তৈরি করার কাজ চলছিল। রাত ১০ টার দিকে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের মো. এনামুল হকের ছেলে সুইট হোসেন (৩০), মামুন হোসেনের ছেলে মিঠু (২৮) ও স্কুলে প্রাক্তন ছাত্র রিমন (২৯) মাদক সেবনের জন্য একটি কক্ষ খুলে জোরপূর্বক মাদক সেবন করতে চায়। কিন্তু কক্ষ খুলে দিতে না চাইলে তারা নানা রকম হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার জের ধরে পরের দিন রোববার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়ক সাইফুল ইসলামকে (৩০) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযুক্তরা। এক পর্যায়ে গাছের ডাল দিয়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং এলোপাথারিভাবে মারপিট শুরু করে। এ সময় তাকে উদ্ধারের জন্য প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক (মৌলভী) মিজানুর রহমান এগিয়ে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা ও লাঞ্চিত করা হয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাকেও মারপিটের অপচেষ্টা করে অভিযুক্তরা। তবে অবস্থা বেগতিক দেখে অধ্যক্ষ প্রাণভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। তারপরেও তারা অধ্যক্ষকে বাইরে থেকে নানাভাবে হুমকি-ধামকী দিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। অফিস

সহায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার আগের দিন রাতে প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল উপলক্ষে জিলাপি তৈরির জন্য আমরা কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। এসময় অভিযুক্তরা মাদকদ্রব্য সেবনের জন্য আসলে আমি তাদের বাঁধা প্রদান করি। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সকালে তারা প্রতিষ্ঠানে এসে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে আমাকে মারপিট শুরু করে। সহকারী শিক্ষক (মৌলভী) মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারিকে মারপিট করার সময় আমি তাকে রক্ষা করতে গেলে তারা আমাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা ও লাঞ্চিত করে। অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান মণ্ডল বলেন, আমার প্রাক্তন ছাত্রসহ বহিরাগতরা আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মারধর করার সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকেও মারপিট করতে উদ্যত হয়। প্রাণ ভয়ে আমি অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। তখন তারা বাহিরে থেকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আমি আমার সহকর্মীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করি।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, শিক্ষক ও কর্মচারিকে হেনস্তা ও মারপিটের ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে থানায় অভিযোগে করার কথা বলেছি। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক সমুচিত শাস্তি দাবি করছি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার পরিদর্শক (ওসি) শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ঘটনায় অধ্যক্ষ বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ মামলার মূল আসামি উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে সুইট হোসেনকে সতিহাট বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতকে আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password