উত্তাল সাগর, নিরাপদ আশ্রয়ে শত শত ট্রলার

উত্তাল সাগর, নিরাপদ আশ্রয়ে শত শত ট্রলার
MostPlay

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে উপকূলজুড়ে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর বাংলাদেশের স্থলভাগ অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

লঘুচাপের প্রভাব ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে আগামী এক সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ। বৃষ্টি বেড়ে তাপমাত্রা কমে দু-একদিনের মধ্যে দেশ থেকে তাপপ্রবাহ দূর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

দুই দিন ধরে বাগেরহাটের শরণখোলা ও সুন্দরবনের ওপর দিয়ে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে প্রায় তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবন ও উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় ফের বন্ধ হয়ে গেছে ইলিশ আহরণ। প্রবল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত ট্রলারগুলো শুক্রবার সকাল থেকে সাগর ছেড়ে নিরাপদে ফিরতে শুরু করে।

বর্তমানে হাজার হাজার ফিশিং ট্রলার পাথরঘাটা, মহিদপুর, নিদ্রাছখিনা ও পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মেহেরআলী, ভেদাখালী ও দুবলার বিভিন্ন খালে আশ্রয়ে রয়েছে। অপরদিকে বলেশ্বর নদ ও ভোলা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা, বগী, খুড়িয়াখালী ও খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামে বড়িবাঁধের বাইরে বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবারের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।

এ ছাড়া পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা, আলোরকোল, কটকা, কচিখালী ও চরখালী এলাকার বনের ওপর দিয়ে দুই থেকে দিন ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মুঠোফোনে জানান, বঙ্গোপসাগরের বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে দুবলার চর ও আলোরকোলে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। প্রবল বাতাসে বাইরে নামার কোনো উপায় নেই।

স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে বন। তারা বনরক্ষীরা সবাই সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন। কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরজিত চৌধুরী জানান, সুন্দরবনের মধ্যে কটকা এলাকা তুলনামূলক উঁচু। সেখানেও জোয়ারের পানিতে অফিস চত্বর ও বন তলিয়ে গেছে। শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, সাগরে প্রচণ্ড ঢেউ হচ্ছে।

ইলিশ আহরণের হাজার হাজার ট্রলার সুন্দরবন ও উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় এখন নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। এ বছর দুর্যোগে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। পূর্ব সুন্দবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সাগর আশান্ত হয়ে ওঠায় বহু ট্রলার সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় নেওয়া জেলেদেরে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার বনরক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password