বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ বা নিম্নচাপের আভাস

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ বা নিম্নচাপের আভাস
MostPlay

চলতি মাসের ১৩-১৪ তারিখের দিকে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। তখন এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে। আগের চেয়ে দুই দিন ধরে দেশে বেশি এলাকাজুড়ে বৃষ্টি হলেও পরিমাণে তেমন বাড়েনি। আরো দু-এক দিন বৃষ্টির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আজ দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গতকাল  বলেন, ‘এ মাসের ১৩-১৪ তারিখের দিকে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। ফলে এ সময় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।

আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে বাড়তে পারে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা। এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সুরমা ও কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমছে। নেত্রকোনার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিও উন্নতির দিকে। তবে আজ উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপত্সীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

তবে যমুনা বা পদ্মা নদীসংলগ্ন এলাকায় আপাতত কোনো বন্যার শঙ্কা নেই। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গঙ্গা-পদ্মার পানি বাড়ছে, যা সোমবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কিন্তু পানি বিপত্সীমার অনেক নিচে থাকায় সেখানে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানিও কমছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়লেও তা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো নয়।’

--চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত-- ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

--সিরাজগঞ্জের তীর রক্ষা বাঁধে ধস-- কয়েক দিন ধরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে গতকাল সিরাজগঞ্জের কাজীপুর সলিড স্পারের (তীর রক্ষা বাঁধ) অন্তত ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল ভোরে কাজীপুর যমুনা নদীর মেঘাই ১ নম্বর সলিড স্পার এলাকায় এই ধস দেখা দেয়। পাউবোর সিরাজগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সলিড স্পারের অন্তত ৩০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলে ধস ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।

--মানিকগঞ্জে তিন নদীর তীরে ভাঙন-- কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে পানি বেড়ে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুরাতন ধলেশ্বরী, ইছামতী ও কালীগঙ্গা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের আশঙ্কায় নদীর তীরবর্তী অন্তত ২০০ পরিবারের দিন কাটছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো।

--রাজবাড়ীতে বাড়ছে পদ্মার পানি-- রাজবাড়ীতে প্রতিদিনই বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নদীতে ১৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বাড়ায় বেড়িবাঁধের ভেতরে পানি প্রবেশ করে এরই মধ্যে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এভাবে প্রতিদিন পানি বাড়লে এসব এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় পাউবো জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের চার দিনে পদ্মার নিম্নাংশে পানি বেড়েছে ৯৯ সেন্টিমিটার।

--হবিগঞ্জে কালনী-কুশিয়ারা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপরে-- হবিগঞ্জের কুশিয়ারা ও কালনী-কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি এখনো বিপত্সীমা অতিক্রম না করলেও কালনী-কুশিয়ারা নদীর পানি গতকাল বিপত্সীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। হবিগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, বৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পানির জন্য কুশিয়ারা, কালনী-কুশিয়ারাসহ হাওরের পানি বাড়ছে, তবে খোয়াই নদীর পানি কমেছে।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password