বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করে সেই দৃশ্য ধারণ করে ফেসবুকে প্রকাশ করায় ইসমাইল হোসেন (১৭) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বনতেঁতুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইসমাইল দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বনতেঁতুলিয়া গ্রামের প্রবাসী বুলু প্রামাণিকের ছেলে। সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিবেশী ঝালমুড়ি বিক্রেতা আলাউদ্দিনের তিন জোড়া কবুতর হারিয়ে যায়।
কবুতরের খোঁপের (বাসা) সামনে কিছু রক্ত পড়েছিল। সকাল ১০টার দিকে আলাউদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান, চাচাতো-ফুফাতো ভাই শাকিল ও মানিকসহ কয়েকজন ইসমাইলের বাড়ি গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে আসে। তারা ইসমাইলকে গ্রামের একটি পরিত্যক্ত দোকানে নিয়ে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে ইসমাইলের মা ফাতেমা, চাচি ও দাদা মারধরকারী মেহেদীর কাছে যান।
অনুরোধ করে তারা ইসমাইলকে ছাড়িয়ে আনেন। বেলা ১২টার দিকে আলাউদ্দিনের বাড়িতে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে এ নিয়ে বিচার বসানো হয়। সেখানে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মনসুর আলীর মধ্যস্থতায় মেহেদী কবুতর চুরির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। ইসমাইলের মা বিকালের মধ্যে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। এরপরও মেহেদী ও তার ভাইয়েরা ইসমাইলকে মারধর করেন।
এই দৃশ্য ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড করেন। ইসমাইল অপমান সহ্য করতে না পেরে বিকালে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে। তাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই সে মারা যায়। এ প্রসঙ্গে সাবেক মেম্বার দাবি করেন, উভয় পরিবারের আহ্বানে মীমাংসার জন্য তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। মারধরের বিষয়টি তার জানা ছিল না।
দুপচাঁচিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ইসমাইল হোসেন নামে এক স্কুলছাত্র গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছে। তবে তাকে মারধর বা ভিডিও ফেসবুকে দেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ দিলে তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন