আজ বাঁচা-মরার লড়াই বাংলাদেশের

আজ বাঁচা-মরার লড়াই বাংলাদেশের
MostPlay

আজ এশিয়া কাপ টি-২০ টুর্নামেন্টে বাঁচা-মরার লড়াই বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে 'ডু অর ডাই' এই ম্যাচে নির্ভার ক্রিকেট খেলবে বাংলাদেশ। এমন দাবি টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের। এশিয়া কাপের বাঁচামরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। দু’দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় এদিন যে দল জিতবে তারাই পাবে সুপার ফোরের টিকেট।

হাইভোল্টেজ এ ম্যাচের আগে বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে নিদাহাস ট্রফিতে দুবার হারানোর সেই স্মৃতি। সেই টুর্নামেন্টের স্মৃতি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে জ্বলে উঠতে পারেন মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল নিদাহাস ট্রফি নামে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সে আসরে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে ফাইনালে উঠে গিয়েছিল টাইগাররা। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের সেরা পারফরম্যান্স ধরা চলে নিদাহাস ট্রফির সেই পারফরম্যান্সকেই।

সে আসরে শ্রীলঙ্কাকে দুবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষেও দারুণ লড়াই উপহার দিয়ে মুগ্ধ করেছিল ক্রিকেটবিশ্বকে। আর ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ২ রানের সেই হার তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের চিরকালীন দুঃখগাঁথা হয়ে থেকে যাবে। ২০১৮ এর সেই টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচটা ছিল রানবন্যার। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসের পরই অনেকে হার নিশ্চিত ধরে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু ওপেনিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল-লিটন দাস দারুণ ব্যাটিংয়ে শক্ত ভিত দিয়েছিল। এরপর সেখানে দাঁড়িয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৩৫ বলে ৭২ রানের সাইক্লোনে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় হাঁকানো ইনিংসটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশি ব্যাটারের খেলা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসের একটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটা জয় পেলেই বাংলাদেশ ফাইনালে; এমন সমীকরণ ছিল বাংলাদেশের সামনে।

ফাইনালের হাতছানি পাওয়া ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে ৪১ রানেই লঙ্কানদের ৫ উইকেট ফেলে দিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু সেদিন শ্রীলঙ্কার দুই পেরেরা দাঁড়িয়ে যান ত্রাতার ভূমিকায়। দুজনের নৈপুণ্যে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৯ রান করে টুর্নামেন্টের স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরা খেলেছিলেন ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস। আর শেষের দিকে নেমে ঝড় তুলে ৫৮ রান করেছিলেন থিসারা পেরেরা। পরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ব্যাটে ভালোই জবাব দিচ্ছিল বাংলাদেশ।

তবে সাব্বির-সৌম্য-মুশফিকের বিদায়ের পর বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমও ৪২ বলে ৫০ রান করে বিদায় নেন। এরপর সাকিব আল হাসানও যখন বিদায় নেন জয়ের জন্য তখনো ২৭ রান দরকার বাংলাদেশের। এই ধ্বংসস্তূপে সেদিন দাঁড়িয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আহত বাঘের মত মরণ কামড় দেন লঙ্কানদের। দলীয় ১৩৭ রানে মিরাজ ও ১৪৮ রানে অষ্টম উইকেট হিসেবে মুস্তাফিজের বিদায় নিলে রুবেল হোসেনকেই সঙ্গী বানিয়ে লড়েন রিয়াদ।

সেদিন শ্রীলঙ্কা আর জয়ের মধ্যে একমাত্র দেয়াল হয়ে ওঠেন সাইলেন্ট কিলার। এক বল বাকি থাকতে একাই জয় এনে দেন শেষ পর্যন্ত। সেদিন ১৮ বলে তার সেই ৪৩ রানের ইনিংসটা ছিল ওয়ানম্যান শো'র পারফেক্ট উদাহরণ। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সেই ২৭ রানে রিয়াদ ছাড়া আর কারও অবদান ছিল না। মিরাজ ও মুস্তাফিজ রানআউট হয়েছিলেন রানের খাতা খোলার আগেই। রুবেল তো সুযোগই পাননি খেলার।

সেই ইনিংসে ৩০ রানই রিয়াদ তুলেছিলেন বাউন্ডারি থেকে। বাংলাদেশের সামনে আবার শ্রীলঙ্কা। বাঁচামরার এই লড়াইয়ের আগে রিয়াদ-মুশফিক নেই ফর্মে। দলে তাদের জায়গা নিয়েও আছে প্রশ্ন। এশিয়া কাপে সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হওয়ার আগে হয়তো নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হবেন এই দুই তারকা। আরেকবার সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তিতে কি জবাব দিতে পারবেন সকল সমালোচনার?

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password