পত্নীতলায় জমির প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্বেও ভূমি দস্যুদের জমি দখলের চেষ্টা, আদালতে মামলা দায়ের

পত্নীতলায় জমির প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্বেও ভূমি দস্যুদের জমি দখলের চেষ্টা, আদালতে মামলা দায়ের

রাশেদুল ইসলাম, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ পত্নীতলায় জমির প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্বেও ভূমি দস্যুদের জমি দখলের চেষ্টা। শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস ও ভোগ দখলের জন্য বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের। আদালত দোতরফা শুনানী অন্তে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মোকর্দ্দমা নিষ্পত্তি কালত্বক অস্তায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে উক্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার নোটিশ প্রতিপক্ষ বিবাদীগন প্রাপ্ত হলেও বিবাদীগন এলাকার দূদ্ধর্ষ ভূমি দস্যু হওয়ায় বাদীগনকে উক্ত সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় বাদীপক্ষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।

মামলার বিবরনী সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আমাইড় এলাকার যজ্ঞেশ্বর মালী আমাইড় ইউপির সিধাতুল মৌজায় ১৯৫নং এসএ খতিয়ান মূলে মালিক থাকাকালে নিঃসন্তান হওয়ায় তার ভাইয়ের ছেলে নেপাল চন্দ্র মালীকে ১আনা অংশ ও যজ্ঞেশ্বরের স্ত্রী শান্তিবালা দাসীকে ১আনা অংশ ওয়ারিশ রেখে মারা গেলে স্ত্রী শান্তিবালা দাসী জীবনকালে উক্ত সম্পত্তি ভোগদখল করা কালে আরএস ৩১২নং খতিয়ানে ভ্রামাত্নক ভাবে জীবন স্বত্ব উল্লেখ না হয়ে তার নামে ২আনা অংশ রেকর্ড প্রস্তুত হয়।

উক্ত শান্তিবালা দাসী তাহার জীবনস্বত্বের বিষয়ে অবগত থাকা স্বত্বেও ৫ এবং নেপাল চন্দ্র মালী পরবর্তী ওয়ারিশ (ঘবহঃ ৎবাবৎংরঃরড়হ) জানা স্বত্বেও এখতিয়ার বিহীন নিয়মবহির্ভূত ভাবে ১৯/৮/১৯৮০ইং তারিখে বদলগাছী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৫৬৪১ ও ৫৬৪২নং ২টি দলিল মূলে জনৈক আলমগীর কবির ও আল মামুন কিবরিয়া বরাবর হস্তান্তর করে। নেপাল চন্দ্র মালী উক্ত ঘটনা জানতে পেরে যজ্ঞেশ্বর মালীর পরবর্তী ওয়ারিশ (ঘবহঃ ৎবাবৎংরঃরড়হ) নিজেকে মূল মালিক বলে দাবী করে গত ১৯/৮/১৯৮০ইং তারিখে ৫৬৪১ ও ৫৬৪২ বেআইনী যোগসাজসী দলিল ২টি এলাকা বহির্ভূত ফলবলহীন অকার্যকর ভূয়া কাগজপত্র এবং তা দ্বারা বাধ্য নয় মর্মে বিজ্ঞ আদালতে ৮০/১৯৯৭ অঃপ্রঃ মোকর্দ্দমা করলে গত ৩১/০৫/১৯৯৯ সালে দুতরফা শুনানী অন্তে নেপাল চন্দ্র মালী ডিক্রি প্রাপ্ত হন এবং নালিশী সম্পত্তি নিজ নামে খারিজ পূর্বক স্বত্ববান ও দখলীকার থাকাকালে বিক্রয়ের শহরত দিলে মামলার বাদী পত্নীতলা উপজেলার সুবল ডাঙ্গা গ্রামের মৃত বুধাই মন্ডলের ছেলে নুরল ইসলাম,

উপজেলার আমাইড় খামাড়পাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে নুরুন্নাহার বিবি ও মৃত শফি উদ্দীন মন্ডলের ছেলে নজরুল ইসলাম উক্ত সম্পত্তি নিতে ইচ্ছুক হয়ে গত ০৬/০২/২০০৬ইং তারিখে পত্নীতলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ৫৩৮নং দলিল মূলে ২৫শতাংশ, গত ০৮/০৭/২০০৭ ইং তারিখে ২৯৭০নং দলিল মূলে ১৭শতাংশ এবং গত ০১/০২/২০০৯ইং তারিখে ৫৪০নং কবলা দলিল মূলে ১৩শতাংশ উল্লেখিত দলিল গুলি মূলে একুনে মোট ৫৫শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে গত ২৯/১০/২০০৯ ইং তারিখে ১৫২৭/২০০৬-২০০৭ খারিজ কেস মূলে ১-৩ নং বাদীর নামে সাবেক ৬৮৩হাল ১০২৪দাগে ২৫শতাংশ এবং একই দাগে গত ১৯/০২/২০১২ইং তারিখে ১৭২২/২০১১-২০১২ খারিজ কেস মূলে ১/২নং বাদীদ্বয়ের নামে ৩০শতাংশ একুনে ৫৫শতাংশ সম্পত্তি বাদীগন নিজনিজ নাম খারিজ পূর্বক ১২বছর উর্দ্ধোকাল যাবৎ শান্তিপূর্ন ভাবে ভোগদখল করছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯সালে ১নং বাদী তার বাড়ি ভেঙ্গে পূনঃনির্মান কালে তার কাঠের বাক্সে রক্ষিত জমিজমার মূল দলিলপত্র সহ নালিশী জমির মূল খতিয়ান ও খারিজী খয়িান হারিয়ে ফেলে।

এ অবস্থায় মামলার বিবাদীগন পত্নীতলা উপজেলার চকভবানী গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে উজ্জল হোসেন, সিধাতল ডাসনগর গ্রামের গোফর চন্দ্র মালীর ছেলে মহাদেব চন্দ্র মালী এবং একই গ্রামের মৃত হৃদয় চন্দ্র মালীর ছেলে নিরেন চন্দ্র মালী উক্ত নালিশী সম্পত্তিতে কোনদিন কোন প্রকার স্বত্ব, স্বার্থ বা দখল না থাকা স্বত্বেও জোড় পূর্বক অনুপ্রবেশের জন্য এবং বাদীগনকে বেদখলের জন্য গত ১৫/০৬/২০২০ ইং তারিখে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে। এরিই প্রেক্ষিতে বাদীগনের শান্তিপূর্ন দখল ভোগে কোন বিঘœ সৃষ্টি করতে না পারে এবং নালিশী সম্পত্তিতে ফসল রোপন ও কর্তন করতে বাধা প্রদান করতে না পারে সেকারনে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়ের করলে আদালত দোতরফা শুনানী অন্তে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মোকর্দ্দমা নিষ্পত্তি কালত্বক অস্তায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে উক্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার নোটিশ গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ প্রতিপক্ষ বিবাদীগন প্রাপ্ত হলেও তারা এলাকার দূদ্ধর্ষ ভূমি দস্যু হওয়ায় বাদীগনকে উক্ত সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এবং ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ভোরে উক্ত নালিশী সম্পত্তিতে জোড়পূর্বক অনুপ্রবেশ করে বাদীর রোপিত আমন ধান পাওয়ারটিলার দ্বারা নষ্ট করে দেয়। এমন সময় বাদী নুরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা সেখানে বাধা দিতে গেলে তাদের মারপিট ও খুন জখমের ভয় দেখিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

এতে করে নুরুল ইসলামের প্রায় ১০ হাজার টাকা পরিমান আমন ক্ষেতের ক্ষতি সাধন হয়। এ ঘটনায় পূনরায় নুরল ইসলাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এব্যাপারে মামলার বাদী নুরুল ইসলাম জানান, প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্বেও শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস ও ভোগ দখলের জন্য বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছি। কিন্তু বিবাদীগন এলাকার দূদ্ধর্ষ ভূমি দস্যু হওয়ায় তাদের উক্ত সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করে তাদের লাগানো জমিতে ধান সহ অন্যান্য ফসল বিনষ্ট করে বাদীগনকে নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password