বিসিএসে আবেদন নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর

বিসিএসে আবেদন নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর
MostPlay

৪৪তম বিসিএসের জন্য ইতিমধ্যে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে আগামী ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ পর্যন্ত। বিসিএসের স্বপ্নপূরণের এ অভিযাত্রায় প্রথম পদক্ষেপ হলো সঠিকভাবে আবেদন করা। অনলাইনে ফরম পূরণ করতে গিয়ে প্রার্থীদের মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দেয়। তাঁরা সেসব বিষয়ে সঠিক উত্তর জানতে চান।

আবেদনকারীদের তেমন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ৩৫তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা রবিউল আলম লুইপা।

প্রশ্ন: একজন প্রার্থী একই সঙ্গে কয়টি ক্যাডার পছন্দ করতে পারবেন? নিশাত নিশি উত্তর: বিসিএসে জেনারেল ও টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল—এই দুই ক্যাটাগরির ক্যাডার রয়েছে। একজন প্রার্থী সব জেনারেল ক্যাডার (৪৪তম বিসিএসে ১৩টি) এবং তার স্নাতকের বিষয়সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডারে (এটি কারও ক্ষেত্রে শূন্য, কারও ক্ষেত্রে এক বা একাধিক হতে পারে) আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন ফরমের শিক্ষাগত যোগ্যতার ছক পূরণ করলেই আপনার জন্য কয়টি ক্যাডার প্রযোজ্য, সেটি পর্দায় দেখতে পাবেন। আপনার জন্য প্রযোজ্য ক্যাডার তালিকা থেকে আপনি কয়েকটি বা সব কটি ক্যাডার পছন্দক্রম অনুসারে সাজিয়ে নিতে পারবেন।

প্রশ্ন: ৩১ জানুয়ারি আমার স্নাতক চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে। আমাকে কি ৩১ জানুয়ারিতেই আবেদন করতে হবে? (সুজন)।

আমার অনার্স চতুর্থ বর্ষ লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ৬ ফেব্রুয়ারি। আমি কি আবেদন করতে পারব? (সাদিয়া আলম)। অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট কি আবেদন করার সময় প্রয়োজন হয়। নাকি পরে দিতে হয়? রাহুল হাসান উত্তর: আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি। এ সময়ের মধ্যে যেসব শিক্ষার্থীর স্নাতক পর্যায়ের সব লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে, কিন্তু ফলাফল প্রকাশিত হয়নি, তাঁরা অ্যাপিয়ার্ড প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে পারবেন।

তাঁরা আবেদন চলাকালীন যেকোনো সময়ে আবেদন করতে পারবেন। ফলাফলের জায়গায় অ্যাপিয়ার্ড বাছাই করতে হবে এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষা শুরু ও শেষের তারিখ উল্লেখপূর্বক অ্যাপিয়ার্ড প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। প্রশ্ন: বিসিএসের আবেদন ফরমের স্বাক্ষর কি জাতীয় পরিচয়পত্রের স্বাক্ষরের সঙ্গে মিল রেখে করতে হবে?

মনিকা হোসাইন উত্তর: বিসিএস আবেদন ফরমে ব্যবহৃত স্বাক্ষর নতুন করে দিতে পারেন বা জাতীয় পরিচয়পত্রের স্বাক্ষরও দিতে পারেন। তবে বিসিএস নিয়োগপ্রক্রিয়ার শেষ পর্যন্ত আপনাকে একই স্বাক্ষর (আবেদন ফরমের স্বাক্ষর) ব্যবহার করতে হবে। স্বাক্ষর বাংলা নাকি ইংরেজিতে, এটি নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। স্বাক্ষর অর্থ প্রার্থীর নিজ হাতে লিখিত চিহ্ন। এটি বাংলা বর্ণ, ইংরেজি বর্ণ বা মিশ্র যেকোনো ভাবে দেওয়া যায়।

প্রশ্ন: প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাসের পর লিখিত পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র পরিবর্তন করা যায় কি না। সাকিব হোসেন উত্তর: বিসিএসের আবেদন ফরম পূরণ করার সময় একজন প্রার্থী যে পরীক্ষার কেন্দ্র (প্রতিটি বিভাগ একেকটি পরীক্ষার কেন্দ্র) নির্বাচন করবেন, প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা সেই কেন্দ্রেই দিতে হবে। কেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

প্রশ্ন: তিন বছর মেয়াদি ডিগ্রি পাস কোর্স শেষ করে কি বিসিএসে আবেদন করা যাবে? অনিক ইসলাম উত্তর: বিসিএসে আবেদনের শিক্ষাগত যোগ্যতায় এইচএসসি পাসের পর ৪ বছর মেয়াদি শিক্ষা সমাপনী ডিগ্রি থাকার কথা বলা হয়েছে। তাই তিন বছর মেয়াদি পাস কোর্স ডিগ্রি সম্পন্ন করা প্রার্থীদের অতিরিক্ত দুই বছর মেয়াদি মাস্টার্স শেষ করে বিসিএসে আবেদন করতে হবে।

প্রশ্ন: বিসিএসের আবেদন ফরমে মেয়েরা হিজাব পরিহিত ছবি ব্যবহার করতে পারবেন কি না। অরিশি উত্তর: ছবিতে হিজাব নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ছবিতে মুখমণ্ডল পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হতে হবে, এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এ ছাড়া ৪৪তম বিসিএস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৯.০ নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থীর ছবি ৩০০ x ৩০০ পিক্সেলের ও ১০০ কিলোবাইটের কম হতে হবে।

তিন মাস আগে তোলা ছবি ও সানগ্লাস পরা ছবি দেওয়া যাবে না। প্রশ্ন: প্রফেশনাল ক্যাডার পছন্দের তালিকার প্রথমে রাখার কোনো সুবিধা আছে? (মেরিনা মোকাদ্দেস) উত্তর: প্রফেশনাল বা উভয় ক্যাডারে আবেদন করে প্রফেশনাল ক্যাডার পছন্দের প্রথমে রাখা মানে আপনি আপনার স্নাতকের পঠিত বিষয়–সম্পর্কিত পদে কাজ করতে আগ্রহী।

এটা ভাইভা বোর্ডে সাধারণত ইতিবাচকভাবে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে আপনার বিষয়ভিত্তিক পরিমিত জ্ঞান থাকলে মৌখিক পরীক্ষায় আশানুরূপ নম্বর পেয়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকতেও পারেন। প্রশ্ন: কোনো ক্যাডার প্রথম চয়েস হিসেবে দিলে বিশেষ কোনো সুবিধা আছে কি? আমি যদি পুলিশ ক্যাডার প্রথম আর প্রশাসন ক্যাডার দ্বিতীয় পছন্দে রাখি, তাহলে পুলিশ ক্যাডার না পেলেও প্রশাসন ক্যাডারের উপযুক্ত নম্বর থাকলে ক্যাডার প্রাপ্তিতে কোনো অসুবিধা হবে কি?

নাকি যাঁরা প্রশাসন প্রথম পছন্দ দিয়েছেন, তাঁরা বেশি সুবিধা পাবেন? মানাম শেখ উত্তর: পছন্দের ক্যাডার প্রাপ্তিতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মোট নম্বর অনুযায়ী মেধাতালিকা তৈরি করা হয়, পছন্দের তালিকায় প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থান নয়। ধরুন, পুলিশ ক্যাডারে ৫০ জন ও প্রশাসন ক্যাডারে ২৫০ কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে দেখা হবে, আপনার প্রাপ্ত নম্বরটি পুলিশ ক্যাডার প্রার্থীদের মেধা তালিকার প্রথম ৫০ জনের মধ্যে আছে কি না।

থাকলে আপনাকে পুলিশ ক্যাডার দেওয়া হবে। তা না থাকলে, আপনার পছন্দের দ্বিতীয় তালিকায় গিয়ে দেখা হবে আপনার প্রাপ্ত নম্বরটি প্রশাসন ক্যাডার প্রার্থীদের মেধা তালিকার প্রথম ২৫০ জনের মধ্যে আছে কি না। থাকলে আপনাকে প্রশাসন ক্যাডার দেওয়া হবে। তা না থাকলে আপনার পছন্দের তৃতীয় তালিকার ক্যাডারে আপনার মেধা অবস্থান যাচাই করা হবে।

প্রশ্ন: নিজের স্নাতকের বিষয়ে টেকনিক্যাল ক্যাডার আছে, এ রকম কেউ যদি শুধু জেনারেল ক্যাডারে আবেদন করেন, ক্যাডার না পেলে তিনি কি টেকনিক্যাল নন-ক্যাডার পাবেন? (মোহাম্মদ রাসেল)। আমি যদি শুধু প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডারে আবেদন করে ক্যাডার না পাই, তাহলে জেনারেল নন-ক্যাডার কি পাব? গওহর রিজভী উত্তর: একজন প্রার্থী জেনারেল বা টেকনিক্যাল বা উভয় ক্যাডার যেভাবেই আবেদন করুক না কেন, তিনি সব নন–ক্যাডার পাওয়ার জন্যই যোগ্য।

(মেধাতালিকা ও প্রার্থীর স্নাতকে পঠিত বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা সাপেক্ষে)। প্রশ্ন: আমার উচ্চতা ১৬২.৫৬ সেন্টিমিটারের কম। আমি কি পুলিশ ক্যাডার চয়েজ দিতে পারব? (আবুল কাশেম)। উচ্চতা কম থাকলে কি নন–ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়? হারিস উত্তর: ৪৪তম বিসিএস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ২৯.২ নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো প্রার্থীর নির্ধারিত উচ্চতা না থাকলে নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না, তাই আপনার উচ্চতা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত উচ্চতা থেকে কম হলে আপনার পছন্দের তালিকায় পুলিশ ও আনসার ক্যাডার না রাখা উচিত।

কারণ, প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে পরে ভুল তথ্য (উচ্চতা) দেওয়ার কারণে বাদ পড়ে যেতে পারেন। আবেদনের কোনো পর্যায়েই ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password