ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ২ জন। ঝিনাইদহে নিহত ৩ জনই ছাত্রলীগ কর্মী। অভিযোগ-প্রতিপক্ষ গ্রুপের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা। ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দুজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। সেসময় প্রতিপক্ষের ধাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের তিন ছাত্রলীগকর্মী।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা সড়কে এসব ঘটনা ঘটে। ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ওই তিন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন- কলেজ সংসদের ভিপি মুরাদ বিশ্বাস, তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ বিশ্বাস। আহতদের মধ্যে জিএস সজীবুল হাসান ও অপর একজনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, ডিভিএম ডিগ্রির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম আহমেদের সঙ্গে বর্তমান জিএস সজীবের বিরোধ চলে আসছে। এ বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের এক নেতার সঙ্গে দেখা করে সজীবসহ আরও কয়েকজন শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের জোহান পার্কে সামনের পৌঁছলে প্রতিপক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়।

এতে সজীবসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে ভেটেরিনারি কলেজ সংসদের ভিপি মুরাদসহ তিনজন মোটরসাইকেলে পালানোর চেষ্টা করেন। সেসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই সড়কের ১৮ মাইল নামক স্থানে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়, দুমড়ে মুচড়ে যায় মোটরসাইকেল। আহত ছাত্রলীগ কর্মী ও কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস সজীব বলেন, আমাদের আন্দোলন ও অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাগর ভাই কথা বলার জন্য শহরে যেতে বলেন।

আমরা তার সঙ্গে কথা বলে শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় জোহান পার্ক এলাকায় পৌঁছলে প্রতিপক্ষ আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেলে আমাদের ধাওয়া করে। সেসময় আমি পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ঝাঁপ দিলে তারাও পুকুরে ঝাপিয়ে পড়ে এবং আমাকে কোপাতে থাকে। পরবর্তিতে কী হয়েছে আমি জানি না। সেসময় তাদের ধাওয়া খেয়ে বেঁচে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ক্যাম্পাসের ডিভিএম ডিগ্রির আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

আমাদের সাঙ্গে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলের মধ্যে একটি থেকে দুজনকে নামিয়ে নেয় প্রতিপক্ষ। তারা আমাদের ধাওয়া করে এবং ১৮ মাইল নামক স্থানে যারা মারা গেছে তারাও ধাওয়া খেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান জানান, এ ঘটনায় কারা জড়িত ছিল এ বিষয়ে আহতরা স্পষ্ট করেনি। তবে আমাদের কয়েকটা টিম এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে।

সত্য ঘটনা জানার জন্য চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক ব্যক্তি জানান, কিছু মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে চুয়াডাঙ্গার দিকে যাচ্ছিল। সেসময় একটি মোটরসাইকেল ট্রাকের সাঙ্গে ধাক্কা খেলে বাকি গাড়িগুলো সেখান থেকে বিভিন্ন দিকে চলে যায়। ঝিনাইদহ সদর থানা ওসি শেখ মো. সোহেল রানা জানান, দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনার জেরে সজীবের ওপর হামলা হয়। সেসময় পালাতে গিয়ে নিহতরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।