বিভিন্ন দেশ থেকে এসে বহু মানুষ নানা ধরনের পেশায় কাজ করছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমানের মতো দেশগুলোতে প্রচুর এশীয় নাগরিক শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রম আইন বা নীতিমালায় পরিবর্তন এবং করোনা মহামারির কারণে প্রবাসী শ্রমিকদের কাজ হারিয়ে নিজ দেশে ফিরতে হচ্ছে।
সৌদি আরবে বেকারত্বের হার কমাতে দেশটির সরকার একের পর এক পরিকল্পনা নিচ্ছে। আর এসব পরিকল্পনার বেড়াজালে বিপাকে পড়ছেন প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি দেশটির সরকার প্রবাসীদের জন্য ১২ ক্ষেত্রে কাজ নিষিদ্ধ করেছে।ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লোকবল নিয়োগে ৭০ শতাংশ সৌদিকরণ বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি সরকার। এ নিয়মের বাইরে কাউকে পেলে জেল থেকে শুরু করে মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান করা হয়েছে।
এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারিয়ে সৌদি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। একই সঙ্গে এসব দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ দেশের নাগরিকদের চাকরিতে যোগ দেয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। সরকারি এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৭৪ হাজার সৌদি নাগরিক দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পেয়েছেন।ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন ও সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশটিতে মোবাইল, বোরকার দোকান, রেন্টে কার, একাউন্টিং, নারীদের তৈরি পোশাকের দোকানের পর এবার নতুন করে ১২ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবাসীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়।
নতুন আইন অনুযায়ী, চশমা, ঘড়ি, বাড়ি বা গৃহ নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ির যন্ত্রাংশ, গাড়ির শো রুম, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বিদ্যুৎ চালিত সামগ্রী, হাসপাতালে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, চকলেট বা মিষ্টান্নের দোকান, রেডিমেড কাপড়ের দোকান, ক্রোকারিজ সামগ্রী, কার্পেট, ফার্নিচার বা ডেকোরেশনের দোকানে শুধুমাত্র সৌদি নারী-পুরুষ কাজ করতে পারবে। এতে দেশটিতে প্রবাসীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ২ শতাংশ কমেছে। গত বছরের শেষের দিকে সেখানে প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৩ লাখ ৫ হাজার। অপরদিকে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৌদি নাগরিকের সংখ্যা ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক রিপোর্ট অনুযায়ী, স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২০২০ সালের শেষ কয়েক মাসে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। ওই একই সময়ে ১৮ হাজার সৌদি নাগরিক চাকরি ছেড়েছেন। গত বছর সৌদি ছেড়ে দেশে ফেরা পুরুষদের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার।সৌদির বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার। অপরদিকে দেশটির বেসরকারি খাতে কর্মরত রয়েছে ১৭ লাখ ৫ হাজার সৌদি নাগরিক। সৌদিতে সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন ৭৪ হাজার প্রবাসী।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন