পরকীয়ার জেরে স্ত্রী তার ছেলেকে সাথে নিয়ে স্বামীকে হত্যার চেষ্টা করে। পরে ব্যর্থ হয়ে রাতের অন্ধকারে ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যায় স্ত্রী। নির্মম এ ঘটনাটি রোববার রাতে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউপির কাজীরখিল গ্রামের আলাবক্স মিজি বাড়ীতে ঘটে।
এ ঘটনায় আহতের পিতা আবদুল হক সেনবাগ থানায় আহতের স্ত্রী বিবি কুলসুম পরানী ও ছেলে এমদাদুল হককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বীজবাগ ইউপির কাজীরখিল গ্রামের আলাবক্স মিজি বাড়ীর আবদুল হকের ছেলে আবুধাবী প্রবাসী এনামুল হকের সাথে ১৯ বছর আগে বিয়ে হয় মধ্য বীজবাগ গ্রামের বজলুর রহমান হাজী বাড়ীর মৃত আবদুল হালিমের মেয়ে বিবি কুলসুম পরানীর সাথে।
দীর্ঘ এই সংসার জীবনে তারা দুই ছেলের জনক-জননী। বিয়ের পর থেকে এনামুল হকের স্ত্রী পরানীর সাথে নানা বিষয়ে তার শ্বশুরের পরিবারের দূরত্ব তৈরি হয়। বিয়ের দু’বছরের মাথায় শ্বশুরের পরিবার থেকে পৃথক থাকা শুরু করেন কুলসুম।
এনামুল হক প্রবাসে থাকায় তার স্ত্রী কুলসুম স্বামীর অনুপুস্থিতে কাউকে পাত্তা না দিয়ে নিজের মত করে চলতে শুরু করে বলে জানায় স্বামীর বাড়ির লোকজন। যার জন্য একই বাড়ীতে বসবাস করলেও শ্বশুরের পরিবারের সাথে এনামুল হকের পরিবারের দূরত্ব ছিল সব সময়।
গত ২০১৫ সালে এনামুল হক প্রবাস থেকে বাড়ি এসে ব্যবসা শুরু করেন। এসময় থেকেই এনামুল হকের সাথে স্ত্রীর কলহের সূত্রাপাত। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের সংসারে ঝগড়া লেগে থাকত। পরে এনামুল ঢাকাতে একটা চাকরি নেয়। ঘটনার কয়েক দিন আগে বাড়ী আসার পর আবারো স্ত্রীর সাথে সমস্যা শুরু হয়।
ঘটনার রাতেও স্বামী-স্ত্রী পারিবারিক বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক সময় তাদের সাথে যোগ দেয় বড় ছেলে স্থানীয় বীজবাগ এন কে উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র এমদাদুল হক। স্ত্রী ও ছেলে দু’জনে ঘরের দরজা বন্ধ করে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মা-ছেলে ঘরে থাকা দেশিয় ধারালো টালি দিয়ে এমদাদুল হকের মাথায় কোপ দেয়। এসময় এনামুলের আত্মচিৎকারে পাশের ঘর থেকে আহতের মা ও বাবাসহ বাড়ীর লোকজন এসে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে। আহত এনামুলকে প্রথমে সেবারহাটে, সেখান থেকে সেনবাগ সরকারী হাসপাতালে ও পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয় হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এসব ঘটনার কোন এক ফাঁকে স্ত্রী তার ছেলে এমদাদুলকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আহতের বৃদ্ধ বাবা আবদুল হক স্ত্রী বিবি কুলসুম পারনী ও ছেলে এমদাদুল হককে আসামি করে সেনবাগ থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১৪। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন