ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ববালিয়াডাঙ্গা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও ভিকটিম ওই গৃহবধূর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগে জানা যায়, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে সাঈদ হোসেন, আব্দুল লতিফের ছেলে আলী হোসেন, আব্দুর রহিমের ছেলে জুয়েল, আল আমিনসহ ৫-৭ জন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল এবং বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিতো।
ভিকটিম জানায়, স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। গত ৫-৬ মাস সাঈদ হোসেন নামে একজন আমাকে মোবাইলে ফোন দিতো। বিভিন্ন সময় ফোনে উত্ত্যক্ত করতো এবং ফোন দেওয়ার বিষয়ে কারও কাছে বললে আমাকে ও আমার সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকি দিত। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে কুপ্রস্তাব দিতো। এরপর ৩০ জুন মঙ্গলবার ঘটনার দিন রাতে সাঈদ ফোন দিয়ে আমাকে ঘরের বাইরে আসতে বলে।
না খুললে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকবে। মানসম্মানের ভয়ে তিনি ঘরের দরজা খুলতেই তারা ৩-৪ জন আমকে বাড়ির পেছনের একটি আমাবাগানে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে তারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে সেই দৃশ্য ধারণ করে। এরপর তিনি বেহুশ হয়ে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকেন। ২-৩ ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে আসলে তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছেন দেখতে পান। এরপর তিনি আস্তে আস্তে উঠে বাড়ির দিকে চলে আসেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পরদিন সকালে আমি কাউকে কোনও কিছু জানানোর আগেই তারা আমাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে শুরু। যেন আমি কাউকে কিছু না বলি। কাউকে কিছু বললে তারা আমার সস্তানের অনেক ক্ষতি করবে ও ধর্ষণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব। আমি এই ভয়ে চুপ থাকি। এরপর তারা আমাকে ফোন দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। না হলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের কাছে থাকা ওই ভিডিও কয়েকজনকে দেখালে পরে বিষয়টি লোক জানাজানি হয়।
ভিকটিম ওই গৃহবধূ এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন আর যারা আমাকে এই কাজ করেছে তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। আমার মতো কোন মা যেন এমন ঘটনার শিকার না হয়।
তিনি বলেন, আমি গেল আট জুলাই কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন