ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগে দুই শিক্ষক বরখাস্ত

ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগে দুই শিক্ষক বরখাস্ত
MostPlay

বগুড়ায় দুই ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগে বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও ইংরেজির প্রভাষক আবদুল মোত্তালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

শনিবার (২৯ আগস্ট) এই তথ্য নিশ্চিত করেন বগুড়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুর রহমান সোহাগ।

তিনি জানান, শুক্রবার রাতে কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক এই সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার তদন্তে তার নেতৃত্বে একটি ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারি জানান, প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও আবদুল মোত্তালিব ছাত্রীদের সাথে সবসময় অশোভন আচরণ করে থাকেন। এর আগেও ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ ওঠে প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিয়াম ফাউন্ডেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে।

তবে, এতেও ওই শিক্ষকের চিন্তা-ভাবনায় কোনো ধরনের পরিবর্তন আসেনি। গত ২০ জানুয়ারি শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ নিজের বাড়ির সামনে ওই ছাত্রীকে আটকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান। করেন। ছাত্রীর পরিবার এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাবেক ডিসি ফয়েজ আহাম্মদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে তাদের জোরপূর্বক সমঝোতা করানো হয় বলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে ফোন করে ক্ষমা চান। সম্প্রতি এই ফোনালাপের অডিও পরে ভাইরাল হয়।

বরখাস্ত হওয়া আরেক প্রভাষক আবদুল মোত্তালিব সাবেক এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। গত ২৬ আগস্ট ওই শিক্ষক ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ওই শিক্ষার্থীর সাথে অশালীন কথাবার্তা বলেন। পরে ওই শিক্ষার্থী তাদের কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সেটি। অভিযুক্ত শিক্ষক মোত্তালিব ওই পোস্ট সরিয়ে নিতে ছাত্রীকে ফোনে হুমকিও দেন।

শুক্রবার রাতে কলেজের সভাপতি ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক এ সম্পর্কে জানতে পেরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এছাড়া ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগ বলেন, “ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে। সময় বেঁধে না দেয়া হলেও আমরা শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।”

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “ওই ছাত্রীর সাথে আমার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তার পরিবারের সাথে আমার সমঝোতা হয়ে গেছে।”

বরখাস্ত হওয়া আরেক শিক্ষক আবদুল মোত্তালিব দাবি করেন, তার ফেসবুক আইডি বারবার হ্যাক করা হয়েছে। তবে, সাবেক ছাত্রীকে ফোন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজী হননি। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password