তালেবানরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে

তালেবানরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে
MostPlay

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সতর্ক করে বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোজোট তাদের সৈন্যদের সরিয়ে নিলে পুরো দেশটিতে তালেবানরা দ্রুত সামরিক শক্তি লাভ করতে পারে। তালেবান ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, আফগানিস্তানে যেসব মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে, তাদের আগামী মাসের শেষের দিকে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার কথা। তবে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির কাছে লেখা একটি চিঠিতে ব্লিংকেন সতর্ক করে এ কথা বলেন।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আফগানিস্তানে আক্রমণ করে দেশটির ক্ষমতা থেকে তালেবানকে সরিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিল। গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প সরকারের পতন হয়। বিজয়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতাগ্রহণের পর চলতি বছর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ জানায় যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তালেবানের সঙ্গে যে শান্তি চুক্তি হয়েছিল, তারা সেটা পর্যালোচনা করবে। ওই চুক্তির আওতায় তালেবানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আফগানিস্তানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর বাকি ১০ হাজার সেনা আগামী ১ মের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়ার কথা।

হোয়াইট হাউস বলছে, ওই সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার আগে তারা নিশ্চিত হতে চায় যে আফগান উগ্রবাদি গোষ্ঠী তাদের 'প্রতিশ্রুতি অনুসারে কাজ করছে'। বিশেষ করে সহিংসতা হ্রাস ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে সহিংসতার মাত্রা এখন অনেক বেশি। সাংবাদিক, অ্যাকটিভিস্ট, রাজনীতিবিদ ও নারী বিচারকদের লক্ষ্য করে হত্যা করা হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের চিঠিটি গতকাল রবিবার বিবিসি হাতে পৌঁছে। যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই চিঠিতে আফগানিস্তানে ৯০ দিনের মধ্যে সহিংসতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে একটি নতুন আন্তর্জাতিক শান্তি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে করে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়। একই সঙ্গে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যেন আরো অবনতি না হয়, এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

চিঠিতে বলা হয়, জাতিসঙ্ঘ যেন ওই অঞ্চলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে বৈঠকে বসে, এর জন্য সংস্থাটিকে অনুরোধ করা হবে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে তুরস্ক সম্ভাব্য স্থান হতে পারে।

আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা স্থগিত থাকায় প্রেসিডেন্ট ঘানি গত শনিবার উগ্রবাদি সংগঠনটিকে সহিংসতা ছেড়ে নতুন করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার শর্ত হিসেবে তালেবানরা দাবি করেছিল যে তাদের কয়েক হাজার বন্দিদের যেন বন্দিবিনিময়ের আওতায় মুক্তি দেওয়া হয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে দোহায় সরাসরি আলোচনা শুরু হয়। তবে এখনো ওই আলোচনায় বড় ধরনের কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password