ভিক্ষা প্রবৃত্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে

ভিক্ষা প্রবৃত্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে
MostPlay

ভিক্ষা প্রবৃত্তি কেউ কি পেশা হিসেবে নেয়?

হ্যা অবশ্যই নেয়। যে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে সেই তো ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়।তবে সুস্থ স্বাভাবিক কোন ব্যক্তি ভিক্ষা প্রবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নেয় না। এর পিছনে থাকে অনেক কারন। বিশেষ করে রাস্তাঘাটে বের হলেই দেখা যায় শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিগুলো বার বার পথচারীদের আকুতি- মিনতি করে ভিক্ষা চাইছে।

তবে ধোঁকাবাজদের সংখ্যাটাও এড়িয়ে যাওয়ার মত নয়। কিন্তু কে ধোঁকাবাজি করছে, আর কে প্রকৃতপক্ষে নিরুপায় হয়ে ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে তা সাধারণ মানুষের পক্ষে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তবে দিন দিন এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা চোখে পড়ার মত বেড়েই চলেছে ক্রমাগত।

এর নেপথ্যে কি আছে?

শারিরিক বিকলাঙ্গঃ
হাত-পা হীনঃ ভিক্ষুক শ্রেণির মধ্যে একটি হাত নেই বা নেই একটি পা, আবার দুটি হাতের একটিও হাত নেই বা দুটি পায়ের একটিও  নেই এমন সংখ্যাটা চোখে পড়ার মত। রাস্তার অলিতে-গলিতে, রাস্তার মোড়ে প্রায়শই দেখা যায় এমন চিত্র। এদের সবাই জন্ম থেকে এরকম নয়। নানা কারনে এই অবস্থা, তবে এই শ্রেণীর বেশিরভাগ ভিক্ষুককে বলতে শোনা যায় যে সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাত পেয়ে এমনটি হয়েছে। কিন্তু এত প্রশ্ন থেকে যায় তবুও।

অন্ধচক্ষুঃ এক চোখে দেখতে না পাওয়া ভিক্ষুক দেখা যায় না। কিন্তু দু-চোখের কোনটাতেই দেখতে পায়না, এমন মানুষ ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে তা সাধারণভাবে প্রায়শই দেখা যায়।এদের বেশিরভাগদের কাছ থেকে শোনা যায় যে তারা জন্ম থেকে এরকম বা কলে-কারখানায় কাজ করতে গিয়ে বা দুর্ঘটনায় দুটি চোখেরই আলো হারিয়ে ফেলেছে চিরদিনের জন্য। চোখে দেখতে পায়না, এখন ভিক্ষা ছাড়া আর উপায় কি?

কিডনি নষ্ট বা হার্টের অপারেশনঃ বাসে উঠলে দেখা যায় কেউ একজন বাসে বসে থাকা প্রতিটি যাত্রীকে একটি কাগজের টোকেন দিয়ে যাচ্ছে। যাতে সাহায্যের জন্য আবেদন জানানো হয় এটা বলে যে, তার একটি কিডনি নাই, আরেকটি নষ্ট, অপারেশন করতে অনেক টাকা লাগবে। আবার কেউ কেউ এটার আকুতি নিয়ে হাজির হয় যে, তার হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, হাপানি হয়, ইনহেলর নিতে হয়। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। 

মায়ের অপারেশনঃ বোরখা পরিহিতা কোন নারী বা কোন সুস্থ যুবককে প্রায়ই দেখা যায় তার মায়ের চিকিৎসার জন্য বাসে যাত্রীদের কাছে সাহায্যের জন্য মিনতি করতে।

মেয়ের বিয়েঃ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য মানুষের দ্বারে এসে সাহায্যের আবেদন জানায় অনেক পিতা, অনেক মাতা। তবে এই সংখ্যাটা এখন কমই দেখা যায়। তবে আছে।

অন্ধ দম্পতিঃ অনেক সময় পথে, বাজারে, রাস্তার মোড়ে, বিশেষ করে জন সমাগম এলাকায় দেখা যায় এক দম্পতির দুইজনই অন্ধ, বা স্বামী অন্ধ, দু-জনে হাত ধরে মানুষের কাছে ভাতের জন্য আকুতি করছে।

জোড়া ভিক্ষুকঃ দু-জন মানুষই শারীরিক ভাবে কর্মক্ষম নন, এক সাথে রাস্তায় গড়িয়ে গড়িয়ে চলছে বর দ্বৈত কণ্ঠে মানুষের কাছে আকুতি করছে। আবার এটাও দেখা যায় যে, বাবা অসুস্থ, ছোট বাচ্চাটা হুইল চেয়ারে গান গেয়ে গেয়ে বাবার জন্য মানুষের কাছে চোখ ছলছল করে মিনতি করে টাকা চাইছে।

এমনিভাবে শত শত ভিক্ষুককে আমরা প্রতিনিয়ত রাস্তায়, বাসে, রাস্তার মোড়ে, অফিসের সামনে, মসজিদের সামনে, মন্দিরের সামনে, গির্জার সামনে, বাড়িতে বাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পায়।

তবে সমাজের মানুসের জন্য কিছু করাটা সমাজের মানুষেরই দায়িত্ব। এরাও মানুষ, এদেরও পেট আছে, আছে পেটের ক্ষুধা।
তাইতো জীবন জীবিকার জন্য বেছে নিয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password