হযরত রাবেয়া বসরীর (রহঃ) সংক্ষিপ্ত জীবন কাহীনি

হযরত রাবেয়া বসরীর (রহঃ) সংক্ষিপ্ত জীবন কাহীনি
MostPlay

রাবেয়া বসরী (রহঃ) উনাকে নিয়ে অনেক রিসার্চ করেছি।উনার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে জীবনকে সত্যই সার্থক মনে হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই ভুল হলে ক্ষমা করবেন।রাবেয়া বসরী (রহঃ) তিনি ইরাকের বসরী নামক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি যে পরিবারে জন্ম গ্রহন করেছিলেন সে পরিবার একেবারেই হত দ্ররিদ্র পরিবার ছিল।যেদিন তিনি জন্ম গ্রহন করেছিলেন তখন উনাদের ঘরে বাতি জ্বালানোর জন্য তৈল ছিল না। রাবেয়া বসরী (রহঃ) মাতা উনার স্বামীকে বললেন যাও কারও কাছ থেকে বাতির জন্য তৈল সংগ্রহ করে নিয়ে আসো। রাবেয়া (রহঃ) পিতা তিনি ছিলেন সত নিষ্ঠাবান ব্যক্তি।

তিনি যে কারও কাছে গিয়ে হাত পাতবেন তিনি তা লজ্জাবোধ করতেন। অবশ্য স্ত্রীর কথা অনুযায়ী স্বামী তৈল সংগ্রহ করার জন্য ঘর থেকে বের হলে কিচ্ছুক্ষন ঘুড়াঘরী করে ঘরে ফিরেন তখন খালি হাত দেখতে পেয়ে স্ত্রী ঠিকেই বুঝতে পারলেন তিনি কারও কাছে গিয়ে হাত পাতেননি আর কোন প্রশ্নও করেন নি উনাকে।এবং সেই রাতে স্বপ্ন দেখেন যে সে দেশের বাদশা ঈসা নামের এক ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে ১০০ বার করে দূরদ শরীফ পাঠ করে ও প্রতি বৃহস্পতিবার নবীজীর খেতমতে ৪ শত বার দূরদ পড়েন কিন্ত তিনি এক বৃহস্পতিবার ৪শ বার দূরদ পাঠ করতে পারেন নি। তাই সদগাহ হিসাবে ৪শ দেরহাম আমীর ঈসার কাছ থেকে স্বপ্নে আনতে বলা হয়।পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে উনার স্ত্রী সাথে স্বপ্নের বিবরন নিয়ে আলোচনা করেন। তখন কাগজের মধ্যে স্বপ্নের কথা লিখে স্ত্রী বাদশার কাছে যাওয়ার জন্য স্বামীকে বললেন।

স্বামী কথা অনুযায়ী কাগজ নিয়ে বাদশার কাছে গেলেন তারপর কাগজ টি বাদশার হাতে দিলেন। বাদশা ঈসা সব কিচ্ছু পড়ে খুশি হলেন আর সাথে সাথেই ৪ শ দেরহাম দিয়ে দেন।তিনি আরও বললেন তোমার যা কিচ্ছু প্রয়োজন হবে তা আমাকে জানাবে। রাবেয়া বসরী (রহঃ) পিতা তখনেই বুঝলেন রাবেয়া বসরী সাধারন কোন মেয়ে না।কয়েক বছর পর পিতা মাতা মারা গেলে তাদের এলাকায় র্দুভিক্ষ শুরু হয়।মানুষ মানুষকে বিক্রি করতও ন্যয়হীন বিচার করতো মানুষের উপর। খুব অসয়িংসতা শুরু হয় এলাকায়। তখন রাবেয়া বসরীকে এক ধনী লোক কিনে নেয়। সেখানে কঠুর কাজ করতে হয়েছিলও রাবেয়া বসরীকে। কিন্ত তিনি ছিলেন আল্লাহ ওয়ালা নবী প্রেমিক ফয়েজগার একজন মহিলা।

তিনি কঠর পরিশ্রম শেষে আল্লাহকে মন উজার করে ডাকতেন। রাতে যখন কাজ শেষ হতো তখন সারারাত ইবাদত বন্দেগী করে আল্লাহর কাছে কাঁদতেন। একদিন বাড়ির মালিক গভীর রাতে ঘরের চারপাশ ঘুরে পায়চারি করছিলেন পায়চারি করতে গিয়ে দেখলেন রাবেয়া বসরী (রাঃ)ঘরে বাতি জ্বালানো একটু এগিয়ে দেখলেন তিনি ইবাদাত বন্দেগীতে মুশকুল। তখন ঘরের মালিক মনে মনে ভাবলেন সারাদিন এতো পরিশ্রমের কাজ করে তারপরও যেতটুক বিশ্রামের সময় নেওয়ার কথা সে সময়টাতেও আল্লাহর দরবারে ফানাফিল্লা করছে।

তাকে দিয়ে আর কোন এমন কাজ করাতে পারি না। পরের দিন সকালে রাবেয়া বসরী (রহঃ) ডেকে এনে মালিক বললেন তোমার কোন কাজ করতে হবে না তোমার যেখানে ইচ্ছা সেখানে চলে যেতে পারও তোমার মুক্তি করে দিলাম। রাবেয়া বসরী মনোমুগ্ধকর এমন কথা শুনে মালিকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেন। কয়েকদিনের মধ্যেই উনার নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় অনেক মানুষ ইসলামী শিক্ষা নিতে রাবেয়া (রহঃ) কাছে আসতেন।

কেউ কেউ আবার ভাল পরামর্শের জন্যও আসতেন। একদিন উনার মাকামে দুই মসাফির আসেন।ইসলামী কথা বার্তা
শিখার জন্য। অনেক সময় ধরে রাবেয়া বসরী (রহঃ) সাথে আলাফ করেন সময় টা যখন দুপুর ফেরিয়ে যাচ্ছিল দুই জন মুসাফির একজন আরেকজনকে বলছে দুপুর ফেরিয়ে যাচ্ছে আমাদের কি কিচ্ছু খাবারের ব্যবস্থা করবে না। তারা লজ্জায় কিচ্ছু বলতেও পারছেন না।আর রাবেয়া বসরী ঠিকেই বুঝতে পারছেন পথিকদের ক্ষিতা লেগেছে তাই ঘরে থাকা দুইটি রুটি তাদের সামনে এনে দিলেন।কিন্তু তারা বুঝতে পারছিলেন না এই রুটি দুটি কে খাবে। কিচ্ছুক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর এক ভিক্ষুক আসলও।

ভিক্ষুকটি এসে রাবেয়া বসরীকে বলল মা অনেক দিন ধরে কিচ্ছু খাইনি আমাকে একটু খাবার দাও।তখন মুসাফিরের সামনে
থাকা দুই খানা রুটি রাবেয়া বসরী (রহঃ) ভিক্ষুককে দিয়ে দিলেন। মুসাফিররা যেতই দেখছেন ততোবেশী অভাক হচ্ছেন। কিচ্ছু বুঝতে পারছিলেন না। কিচ্ছুক্ষণ পর দেখা গেলও রাবেয়া বসরী (রহঃ) বাড়িতে প্রতিবেশী একজন বেশ খানিক রুটি ও গুস্ত নিয়ে আসলও তখন এই খাবার গুলো মুসাফিরদের দিয়ে দিলেন। মুসাফিরাতো খুব অবাক তারা রাবেয়া বসরী (রহঃ) কে বলে আমাদের পেট ভরে গেছে আগে বলোন আপনি এতক্ষণ কি করলেন। রাবেয়া বসরী (রহঃ)বললেন অভাক হওয়ার কিচ্ছু নেই আপনারা যখন আমার মাকামে আসলেন আমার ঘরে দু খানা রুটি ছাড়া কিচ্ছুই ছিলও না। যা ছিল তা আপনাদের সামনে দিয়েছিলাম।

কিন্ত আমি জানি দু খানা রুটি দিয়ে আপনাদের ক্ষিতা নিবারন করা সম্ভব নয়।তাই হঠাৎ এই ভিক্ষুক আশাতে আমার মন একটু প্রশান্তি পেলও যখন ভিক্ষুক টি এসে বললও আমার ক্ষিদা তখন তাকে দুটি রুটি দেওয়া উত্তম মনে হলো কারন দুটি রুটি দিয়ে আপনাদের পেট ভড়ানো সম্ভব নয়। আর এই দুটি রুটি ভিক্ষুকের জন্য পর্যাপ্ত।আর প্রতিবেশীর কাছ থেকে খাবার পাওয়ার কারন হচ্ছে। ওইছে ভিক্ষুকে খাবার দান করছিলাম সেটার বদলতে আল্লাহ রিজিক প্রদান করেছেন।

আল্লাহর কাছে কোনও কিচ্ছু কমতি নেই। রাবেয়া বসরীর যা প্রয়োজন হতো আল্লাহর কাছেই. চাইতেন।একবার এক মুরিত এসে প্রশ্ন করেন আপনি যে আল্লাহর জন্য এতো ফানাফিল্লাহ আপনি কি কখনো আল্লাহ কে দেখেছেন তিনি তার জবাবে বললেন আমি যদি আল্লাহকে না দেখতাম তবে আমি আল্লাহর ইবাদাত করতাম না।তিনি আরও বক্তদের বলতেন তোমার আল্লাহ পাবার জন্য ইবাদাত করও কোনও স্বার্থর জন্য করও না। আল্লাহর প্রেম নিয়ে খেলা করও দেখবে আল্লাহ তোমার কল্বের ভিতর খেলা করছেন। আল্লাহর প্রতি প্রেম ভালাবাসা উনার এমন ছিল যে তা অতুলনীয়।

তিনি জান্নাত পাবার আশায় নয় না জাহান্নামের আগুন থেকে বাচার জন্য ইবাদাত করতেন। তিনি দিন রাত প্রতিটা মূর্হত আল্লাহকে পাবার আশায় মুশকুল থাকতেন। একবার ফোরাত নদীর তীরে রাবেয়া বসরী (রহঃ) ধ্যনে মগ্ন ছিলেন এসময় তখনকার সাধক হাসান বসরী তাকে দেখে জায়নামাজ পানির উপরে ভিজান যাতে করে রাবেয়া বসরীর কেরামতি দেখতে পান তিনি রাবেয়া বসরীকে ডাক দিলেন বললেন হে রাবেয়া বসরী আসো দাড়িয়ে জায়নামাজে দুই রাকাত নামাজ পরি।

এসময় রাবেয়া বসরী কিচ্ছু সময় চোপ করে থাকেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে হাসান বসরী তাকে পরিক্ষা করছেন। তখন তিনি জায়নামাযটিতে বসে শূন্যর উপর উরান আর বলতে থাকেন জনাব আসুন দুই রাকাত নামাজ পড়ি। তখনেই হাসান বসরী বুঝতে পারলেন তাপসী রাবেয়ার মাকাম আমার মাকামের উপর।তিনি পায়ে হেটে হজ্জ করে অন্যতম দৃষ্টান্ত রেখেছেন।

আল্লাহর প্রতি এতো প্রেম ভালবাসা যা সত্যই অতুলনীয় ছিলও।তিনি কুমারী ছিলেন বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাল ভাল সম্বন্ধ আসছিলও আল্লাহর প্রতি প্রেম ভালবাসা কম হবে বলে বিয়ে করেননি। তিনিই তো মহান তিনিই আল্লাহর ওলী তিনিই আল্লাহর প্রেমিক ।তিনিই আল্লাহর সাচ্চা বান্দী।আল্লাহ যেন আমাদের কে এরখম আল্লাহর গোলামি করার তৈফিক নছীব করেন ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password