পেটে তুলা গজ রেখেই সেলাই

পেটে তুলা গজ রেখেই সেলাই
MostPlay

পেটের ব্যথা নিয়ে হসপিটালে ভর্তি হন রোগী। চিকিৎসক এ্যাপেন্ডিসাইটের সমস্যা মনে করেন। কোন রকম পরীক্ষা ছাড়া অপারেশন করেন। পরে তুলা ব্যান্ডেজ রেখেই পেট সেলাই করেছেন চিকিৎসক। দীর্ঘ দুই মাস অসহনীয় ব্যথা সহ্য করেন রোগী। পরে আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। পেটের ভেতর ধরা পড়ে তুলা ও ব্যান্ডেজ। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অপরারেশন করা হয়।এমন ঘটনায় রোগীর স্বজনরা রোববার কুমিল্লার আদালতে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ফেয়ার হসপিটালে এই ঘটনা ঘটে।

মামলায় ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ও ডা. মো. রাশেদ-উজ-জামান রাজিবকে আসামি করা হয়। বাদী রোগীর ভাই তানজিদ সাফি অন্তর। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে।মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল রাতে বরুড়ার রাজাপুর গ্রামের কাশেম শফি উল্লার মেয়ে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ওইদিন রাতে স্বজনরা তাকে বরুড়া ফেয়ার হসপিটালে ভর্তি করান। পরে ১৩ এপ্রিলে ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের তত্ত্বাবধানে ডা. মোঃ রাশেদ-উজ-জামান রাজিব অপারেশন করেন। এ সময় পেটে গজ রেখে সেলাই সম্পন্ন করেন ডা. রাজিব। পরে রোগীর পেটে ব্যথা অনুভব হয়।

মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, ব্যথা কমাতে ডা. ইকবাল হাই পাওয়ার এন্টিবায়োটিক ওষুধ লিখে দেন। এভাবে ৩ মাস চলার পরে রোগীর ব্যথা কমেনি। পরে রোগীর ভাই তানজিদ সাফি অন্তর তার বোনকে আলট্রাসনোগ্রাফি করান। পেটে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেন। ১৮ জুলাই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডা. আজিজ উল্লাহ ও ডা. মাহমুদ রোগীকে পুনরায় অপারেশন করান। রোগীর পেট থেকে পুঁজ বের হয়।

তানজীদ রফি অন্তর জানান, ডা. ইকবাল ও রাজিব আমার বোনের সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়া অপরারেশন করেন। পরে পেটে গজ রেখেই সেলাই করে। আবার ব্যথা হলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক প্রেস্ক্রাইব করেন। ৩ মাস এমন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ওষুধে আমার বোনের অবস্থা আরো খারাপ হয়। সঠিক বিচার চাই। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, অপরাশেনের দিন তিনি ছিলেন না। রোগী যেদিন হসপিটাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি গেছে, সেদিনও তিনি হসপিটালে ছিলেন না। তবে তিনি রোগীকে ওষুধ দিয়েছেন।কিভাবে রোগীর অবস্থা না বুঝে ওষুধ দিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. ইকবাল জানান, ওই সময় রোগীর মাসিকের সময় ছিলো। আমি মাসিক হবে মনে করে ওষুধ দিয়েছি। অপারেশন করিয়েছেন ডা. রাজিব।আপনাদের দু’জনের সমন্বয় ছাড়া অপারেশন কিভাবে হলো- এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি ডা. ইকবাল।অভিযোগের বিষয়ে ডাক্তার রাশেদ উজ-জামান রাজিব বলেন, ঘটনা যেহেতু চার মাস অতিক্রান্ত হয়েছে, তাই আমি বিস্তারিত জেনেই কথা বলবো।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password