ঝটপট লোনের নামে রবির প্রতারণা!

ঝটপট লোনের নামে রবির প্রতারণা!
MostPlay

টেলিকম অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে কোন কারণ ছাড়াই বিভিন্ন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসের নামে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ বেশ পুরনো এবং চলমান। প্রায় প্রতিদিন অগনিত গ্রাহকের টাকা কেটে নিচ্ছে টেলিকম অপারেটরগুলো। একেক অপারেটরের বিরুদ্ধে একেক পন্থায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠছে।

ঠিক তেমনিভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ‘বিড়িটাইপ.কম’র হাতে এসে পৌছেছে। যেখানে একজন গ্রাহক ঝটপট লোনের নামে রবি গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ করেন। অবশ্য এ বিষয়ে তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেও একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। যা বিড়িটাইপ.কমর সম্মানিত পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধারা হলো-

‘আমি মো: আরেফিন, আজ ৪ মার্চ ২০১৮ তারিখ রোজ রবিবার আনুমানিক রাত ৮টা ২০ মিনিটে আমার ব্যবহৃত রবি নাম্বারের (০১৮......৭৮) ব্যালেন্স প্রায় শেষ হয় আসে। এমতাবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ন ফোন করার তাগিদে ৮টা ২১ মিনিটে *১২৩*০০৮*১# নম্বর ডায়ালের মাধ্যমে ‘রবি ঝটপট লোন’ এর জন্য আবেদন করি। নিয়মানুযায়ী কোম্পানিটি আমাকে লোন হিসেবে টাকা প্রদান করার কথা (যা অন্য অপারেটরগুলো করে থাকে)। যা দিয়ে আমি আমার প্রয়োজন মেটাতে পারি। কিন্তু কোম্পানিটি আমার কোনরুপ অনুমতি ব্যতিত অননেট ১০ মিনিট (৫ টাকা সমমানের) প্রদান করে, যা শুধুমাত্র রবি-রবি ব্যবহারের জন্য। অথচ এটি আমার কোন কাজেই আসেনি। একজন গ্রাহক হিসেবে রবি এখানে আমার প্রয়োজনীয়তাটাকে বিবেচনায় না এনে মনগড়া একটি দায় আমার কাধে চাপিয়ে দিয়েছে। যা ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন করার শামিল বলেই আমি মনে করছি।’

শুধু তাই নয়, রবি থেকে প্রাপ্ত অননেট ১০ মিনিটে আমি আমার প্রয়োজন মেটাতে পারিনি, তখন বিকাশের মাধ্যমে রাত ৮ টা ২৬ মিনিটে অর্থ্যাৎ ৫ মিনিট পর উক্ত নম্বরে ২০ টাকা রিচার্জ করি। এর ৩ মিনিট পর রবি কর্তৃপক্ষ একটি এসএমএসের মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দেয় যে, ‘আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ঝটপট ব্যালেন্সের জন্য ৫ টাকা কেটে নেয়া হয়েছে এবং আমার ঝটপট ব্যালেন্স অবশিষ্ট আছে ০.০০ টাকা।’

অথচ এই সময়ের মধ্যে একটি এসএমএস ছাড়া রবি থেকে প্রাপ্ত ঝটপট ব্যালেন্সের একটি টাকা অথবা একটি মিনিটও আমি ব্যবহার করিনি। তাহলে কোন কারণে রবি কর্তৃপক্ষ আমার ব্যালেন্স থেকে ৫ টাকা কেটে নিল। আর যেহেতু কেটেই নিয়েছে, সেহেতু ওই ১০ মিনিট আমার অধিকার। অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করার সুবাদে ভোক্তা হিসেবে আমিই এর একমাত্র দাবিদার। কোনক্রমেই রবি কর্তৃপক্ষ কিংবা অন্য কেহ আমার এই অধিকারে কোনরুপ সংযোজন/বিয়োজন কিংবা হস্তক্ষেপ করতে পারে না। অথচ রবি কর্তৃপক্ষ তা করেছে। যা গ্রাহক কিংবা ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

এমতাবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনের স্বার্থে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। কারণ শুধু আমিই নয়, প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে হরহামেশাই ব্যালেন্স কেটে নিচ্ছে টেলিকম অপারেটরগুলো। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের যুগোপযোগী পদক্ষেপই গ্রাহক/ভোক্তাদের অধিকার আদায়ের নিয়ামক হয়ে ওঠতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে। তাই এসব প্রতারক কোম্পানিগুলোকে (যারা হরহামেশাই কোন সেবা না দিয়ে অর্থ আত্মসাত করছে) কঠিন শাস্তির আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের একজন নাগরিক এবং ভোক্তা হিসেবে আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

এতো ছোট একটি বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বিড়িটাইপ.কমকে জানান, ‘বিষয়টি শুধুমাত্র ৫ টাকার নয়। বিষয়টি জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ,শুধু আমিই নয়, প্রায় প্রতিদিনই কোটি কোটি গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে হরহামেশাই ব্যালেন্স কেটে নিচ্ছে টেলিকম অপারেটরগুলো। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের যুগোপযোগী পদক্ষেপই গ্রাহক/ভোক্তাদের অধিকার আদায়ের নিয়ামক হয়ে ওঠতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে। তাই এসব প্রতারক কোম্পানিগুলোকে (যারা হরহামেশাই কোন সেবা না দিয়ে অর্থ আত্মসাত করছে) কঠিন শাস্তির আওতায় আনা জরুরী।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৪ কোটি। এখন টেলিকম কোম্পানিগুলো যদি গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ পয়সা করেও কাটে, তাহলে এর পরিমাণ দাড়াচ্ছে ৭ কোটি টাকা। যা মাস শেষে ২১০ কোটি টাকা এবং বছর শেষে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। তিনি বিড়িটাইপ.কমের উদ্দ্যেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, এই আড়াই হাজার কোটি টাকাকে আপনি কিভাবে ছোট করে দেখবেন। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে যেকোন ক্ষুদ্র বিষয়ে যদি বিন্দুমাত্রও ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয়, তবে প্রতিটি সাধারণ নাগরিকেরই এর প্রতিবাদ করা প্রধান দায়িত্ব্য। এক্ষেত্রে সবাই ইচ্ছে করলেই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর তার অভিযোগটি পর্যালোচনা সাপেক্ষে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিবেন।

উল্লেখ্য, অভিযোগকারীর অনুরোধে এখানে তার ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে এবং পূর্ন মোবাইল নম্বরটি প্রকাশ করা হয়নি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password