রায়হানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে: পিবিআই

রায়হানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে: পিবিআই
MostPlay

রায়হান উদ্দিনকে (৩০) নির্যাতন করেই হত্যা করেছেন এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ তার সহযোগী পুলিশ সদস্যরা। ফাঁড়ির ভেতর প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।প্রত্যক্ষদর্শী তিন পুলিশ সদস্য আদালতে ১৬৪ ধারায় এমন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক মো. জিহাদুর রহমানের কনস্টেবল সাইফুল, দেলোয়ার ও শামীমের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেন।
 আদালত সূত্র জানায়, বিকেল ৩টায় তিন পুলিশ সদস্যকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম।এরপর দীর্ঘ প্রায় দুই ঘণ্টা আদালতের কাছে সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন। তাদের তিনজনকে ফের পিবিআই হেফাজতে নেওয়া হয়।
 
মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, কাউকে গ্রেফতার করতে গেলে আগে তথ্য-প্রমাণ দরকার। এই তিন সাক্ষীর সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ হলো রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।তদন্ত সূত্র জানায়, কাউকে অযথা হয়রানি না করতে পিবিআই ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। অবশ্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যতে আকবরকে গ্রেফতারে বাধা থাকবে না। গত রোববার (১১ অক্টোবর) ভোরে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রোববার থেকে আকবর পলাতক।মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্ভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়না তদন্ত করা হয়।
 
রায়হানের হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। প্রতিদিন সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ মানববন্ধন ও রাস্তা অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।এদিকে, সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের (৩০) দেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোলা আঘাত ও ১৪টি জখমের চিহ্ন। এসব আঘাতগুলো লাঠি দিয়েই করা হয়েছে। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণে রায়হানের মৃত্যু হয়।
 
আঘাতে দেহের মাংস থেঁতলে যায়। রগ ফেটে গিয়ে আন্তঃদেহে রক্তক্ষরণ (ইন্টারনাল ব্লিডিং) হয়। আর অতিরিক্ত আঘাতের মূর্ছা যান রায়হান। আঘাত করার সময় রায়হানের পাকস্থলী খালি ছিল। রোববার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়।

 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password