ধুনটে বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিবর্ণ ধানক্ষেত

ধুনটে বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিবর্ণ ধানক্ষেত
MostPlay

ধুনটে বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিবর্ণ ধানক্ষেত। হঠাৎ ভাটার চিমনি দিয়ে বিষাক্ত এবং দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বের হতে থাকে। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় শতাধিক কৃষকের প্রায় ৩০০ বিঘা জমির বোরো ধান ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, চারদিকে খাদুলী, কুড়িগাতি, উজালশিং, গোবিন্দপুর ও জোলাগাতী গ্রাম। এর মাঝখানে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় তিন ফসলি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ৮টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। ইটভাটাগুলো হলো- একতা, ফাইভ স্টার, বস, গ্রামীণ, আদর্শ, বন্ধু, বি.বি.সি ও দিগন্ত। এর বেশিরভাগই লাইসেন্সবিহীন। সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে গড়ে ওঠা এসব ভাটার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ও পরিবেশ।

চলতি বছরের জন্য তাদের ভাটায় ইট পোড়ানো কার্যক্রম কয়েক দিন আগে বন্ধ করার পর হঠাৎ ভাটার চিমনি দিয়ে বিষাক্ত এবং দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বের হতে থাকে। প্রথম দিকে ক্ষয়ক্ষতি তেমন বোঝা না গেলেও ধীরে ধীরে কৃষকেরা দেখতে পান তাদের সবুজ খেতের ধানগাছ ধোঁয়ার কারণে লালচে হয়ে গেছে। পাতা কুঁকড়ে গেছে। ধানের শিষ পরিণত হয়েছে চিটায়। শুধু ধান নয়, নষ্ট হয়েছে অন্যান্য ফসলও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষিবিদ জানান, সাধারণত কয়েকটি চুল্লিতে আগুন রেখেই ভাটা বন্ধ করার নিয়ম। যদি একবারেই ভাটার সব চুল্লিতে আগুন বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে চিমনি দিয়ে প্রচুর পরিমাণ ভারি সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। সেই গ্যাস খুব বেশি ওপরে যেতে না পেরে দ্রুত নিচের দিকে আসতে থাকে এবং কাণ্ড ও পাতায় ঢুকে ফসল ও গাছ নষ্ট করে দেয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা অভিযোগ করেন, ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসর কারণে তাদের জমির ধানে চিটা হয়ে গেছে। এতে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন ব্যয় তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। আর মাত্র ২০-২২ দিন বাদেই ধান কাটা শুরু করব। এই সময় এমন ঘটনা ঘটল। আমরা চাই ভাটার মালিক আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক। আমরা এলাকায় ইটভাটা দেখতে চাই না।

ইটভাটা মালিকদের পক্ষে মেসার্স গ্রামীণ ভাটার মালিক ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ভাটায় বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গমনের ব্যবস্থা আছে। তারপরও যেহেতু কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন, আমরা চেষ্টা করবো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার।

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক বলেন, কৃষকের অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন পরির্দশন করে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password