বর্ধিত মেয়াদেও অর্ধেক কাজ শেষ হয়নি, মন্ত্রীর অসন্তোষ

বর্ধিত মেয়াদেও অর্ধেক কাজ শেষ হয়নি, মন্ত্রীর অসন্তোষ
MostPlay

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের উন্নয়নকাজ দুই বছর আগে শুরু হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই মেয়াদও পার হওয়ার পথে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে।

কাজের ধীরগতিতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় মৌলভীবাজার-১ আসনের সাংসদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে বটুলি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত ভাঙাচোরা প্রায় ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি প্রশস্ত ও মজুবতকরণের কাজ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়। এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৭২ কোটি টাকা। ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন ও স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল নামের ঢাকার দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি পায়।

পরে প্রতিষ্ঠান দুটি ১০ কিলোমিটার জায়গার কাজের দায়িত্ব দেয় মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদস্য ঠিকাদার শহিদুল আলমকে। গত বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বেশ কয়েক মাস কাজ বন্ধ থাকে। পরে কাজের মেয়াদ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

ওই সড়ক দিয়ে উপজেলার জায়ফরনগর, সাগরনাল, গোয়ালবাড়ী ও ফুলতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার লোকজন উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানির কাজে বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি বটুলি শুল্ক স্টেশনে চলাচল করে।

সড়কের কাজে ধীরগতি ও ধুলার কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ১০ ফেব্রুয়ারি উপজেলা সদরের ভবানীপুর এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদের একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সড়কটির কাজে ধীরগতির কারণে জনদুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাঁরা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।সড়কটি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সওজ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সহদেব সূত্রধর বলেছেন, তাঁদের হিসাবে সড়কে এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট প্রকৌশলী মতিউর রহমান বলেন, কিছুদিন বন্ধের পর তাঁরা পুনরায় সড়কটির কাজ শুরু করেছেন। সড়কে দু-একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ এখনো বাকি। মার্চ মাসের দিকে সড়কের  তিন কিলোমিটার জায়গায় কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন। তবে ৩১ মার্চের মধ্যে পুরো কাজ সম্ভব হবে না।

সড়কের ১০ কিলোমিটার অংশের উপঠিকাদার শহিদুল আলম বলেন, ফুলতলা বাজার থেকে বটুলি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জায়গা প্রশস্ত করতে হবে। এ ব্যাপারে সওজ অধিদপ্তরের কাছ থেকে এখনো কোনো অনুমোদন মেলেনি। তাই ওই স্থানে কাজ শুরু করানো যাচ্ছে না। আর বাকি পাঁচ কিলোমিটারের কাজ দ্রুত শুরু করবেন।

সওজ মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন বিডিটাইপকে বলেন, ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password