পরিবহণ জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ বাংলাদেশের

পরিবহণ জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ বাংলাদেশের
MostPlay

ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও সহজ করতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে সড়কপথে পণ্য পরিবহণে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভুটানের সঙ্গে চুক্তি না থাকায় দেশটির বাংলাদেশ অভিমুখী পণ্যবাহী ট্রাক ভারতের স্থলবন্দরগুলোয় দীর্ঘ সময় আটকে থাকাসহ আরও বেশকিছু জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এসব জটিলতা নিরসনে করণীয় জানতে চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করে বিদ্যমান সমস্যার কথা উল্লেখ করে সুপারিশ চাওয়া হয়। এ ছাড়া রেল ও নৌপথে যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

জানতে চাইলে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী চিঠি পাওয়ার কথা জানান। তিনি সাংবাদিককে বলেন, ভুটানের সঙ্গে পণ্য পরিবহণে সমস্যা ও এর সমাধানের সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ একটি সুপরিশও তৈরি করেছে। তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে আরও যেসব পদক্ষেপ রয়েছে সেগুলো আমরা নিয়েছি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পণ্যবাহী যান চলাচলের ওপর একটি প্রতিবেদন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে ভুটান থেকে পণ্যবাহী যান বাংলাদেশে ঢোকার ক্ষেত্রে সমস্যাদি তুলে ধরা হয়। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিবেদনের আলোকে ভুটান থেকে বাংলাদেশে সড়কপথে পণ্য পরিবহণে সমস্যা ও সমাধানের সুপারিশ চেয়েছে। প্রতিবেদনটি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়।

সূত্র বলছে, সরাসরি সড়কপথে পণ্য পরিবহণের সুযোগ না থাকায় ভারতের স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে ভুটান। এতে সময়ক্ষেপণ ছাড়াও নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য সমস্যা নিয়ে ফেব্র“য়ারির প্রথমার্ধে কুমিল্লা সীমান্তে দুই দেশের প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কেএম তারিকুল ইসলাম। ভারতের পক্ষে দেশটির স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নেতৃত্ব দেন। বৈঠকেই দুদেশের মধ্যকার সমস্যা ছাড়াও ভুটানের সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়।

জানতে চাইলে তারিকুল ইসলাম সাংবাদিককে বলেন, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশে বাণিজ্য সহজ করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানের চুক্তি রয়েছে। ফলে দেশ দুটির ট্রাক সরাসরি পণ্য নিয়ে ভারতের স্থলবন্দরগুলোয় আসতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি না থাকায় আমাদের পণ্যবাহী ট্রাক শুধু ভারতের স্থলবন্দরে যেতে পারে। সেখান থেকে ভারত বা নেপাল বা ভুটানের ট্রাকে নিজ নিজ দেশে যায়। তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পণ্য পরিবহণ সহজ করা নিয়ে কাজ করছি।

জানা গেছে, ভুটান ও বাংলাদেশের পণ্য পরিবহণ সমস্যা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে স্থলবন্দরের সমস্যা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ভুটান থেকে বাংলাদেশের জন্য পণ্য নিয়ে আসা ট্রাকগুলোকে কাস্টমস ও সিকিউরিটি সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চেংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। এতে নির্দিষ্ট টাইম স্লট ধরতে পারে না। এ ছাড়া সিএনএফ এজেন্টরাও জটিলতা তৈরি করে। নকুগাঁও স্থলবন্দরের সমস্যা তুলে ধরে এতে বলা হয়েছে, এ স্থলবন্দরে অনানুষ্ঠানিক ও অপ্রত্যাশিত ব্যয় রয়েছে। এতে পরিবহণ খরচ বেড়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কিছু এনজিও নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এতেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিবেদনে রেল ও নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password