ঋতুবর্তি নারী কোরআন তেলওয়াত করতে পারেবে কি?

ঋতুবর্তি নারী কোরআন তেলওয়াত করতে পারেবে কি?
MostPlay

স্তন্যপায়ী শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিষয় হলো গর্ভস্রাব। যেটা প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে।

একজন নারীর পিরিয়ড তাকে প্রতি মাসে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। আরেকটু সহজ ভাষায় বললে, আমরা শুধু জানি বাচ্চা হওয়ার জন্য পিরিয়ড হয়। তো বাচ্চা হওয়ার জন্য পিরিয়ড কেন হওয়া লাগে? কারণ, প্রতিমাসে মেয়েদের গর্ভাশয় তার বাইরের আবরণটাকে শক্ত করে যেন গর্ভবতী হওয়ার পর বাচ্চাকে আশ্রয় দিতে পারে। কিন্তু পরে যখন ভ্রূণ নিষিক্ত হয় না তখন সে তার সেই শক্ত আবরণটাকে ছিঁড়ে ফেলে আবার পরের মাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে। যে কারণে মেয়েদের শরীরের ভেতরের একটা অঙ্গ ছিঁড়ে সেটা সেই রক্তের সাথে বের হয়ে যায়। এই পুরো প্রক্রিয়া গড়ে ২৮ দিনের মধ্যে হয়।

এখন আমরা আলোচনা করবো ঋতুবর্তি নারী বা নাপাকি ব্যক্তি কোরআন তেলওয়াত করতে পারেবে কি?  যদিও  এ বিষয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়

১.কোন কোন বিদ্বান বলেছেন প্রয়োজন থাকলেও ঋতুবর্তি নারীর কোরআন পাঠ করা হারাম।

২. প্রয়োজন দেখা দিলে ঋতুবর্তি নারীর কোরআন পাঠ করতে পারবে। যেমন যদি সে শিক্ষিকা হয়, তবে পাঠদানের জন্য কোরআন পাঠ করতে পারবে। অথবা ছাত্রী শিক্ষা লাভ করার জন্য কুরআন পাঠ করতে পারবে। মোটকথা যখনই ঋতুবর্তি নারীর কুরআন পাঠ করার প্রয়োজন দেখা দেবে তখনই তার জন্য পাঠ করা যায়েজ কোন অসুবিধা নেই। অনুরুপ ভবে কুরআন পাঠ না করার কারণে ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে, স্মরণ রাখার কারণে কোরআন তেলওয়াত করতে পারেবে।

৩. বিদ্বানদের মধ্যে কউ কেউ বলেন, বিনা প্রয়োজনেও তথা সাধারণ তেলওয়াতের উদ্দেশ্যে কোরআন তেলওয়াত করা যায়েজ।

ইবনে উসাইমিন (রহঃ) সাবেক সৌদি সুপ্রিম ফতোয়া বোর্ড প্রধান বলেন, যদি পাঠদান বা শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন অনুভব করে বা ভুলে যাওয়ার আশংকা করে তাহলে কোরআন তেলওয়াত করতে কোন অসুবিধা নাই। (ফতোওয়ায়ে আরকানুল ইসলাম বঙ্গঃপৃষ্টা নং-২১৪,নামায অধ্যায়)

নাপকি অবস্থায় মূল আরবী কুর‘আন র্স্পশ ব্যতিত পাঠ করা জায়েয । রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)সর্ব অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার যিকির আযকর করতেন ।(মুসলিম,মিশকাত হা/৪৫৬)

এক হাদিসে এসেছে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) আমার ঋতু চলাকালীন সময় আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতেন।–(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আরও একটি হাদীসে আয়শা (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে মসজিদ থেকে চাটাই এনে দেয়ার নির্দেশ দেন। জবাবে আমি বলি-আমি তো ঋ্তুবতী। রাসূল (সাঃ) বলেন তোমার ঋতু তো তোমার হাতে নয়।  (অর্থাৎ ঋতুবতী হওয়ার কারণে তোমার দুই হাত তো নাপাক হয়নি।)

অতএব কম্পিউটার বা মোবাইলের পর্দায় কুরআন দেখে পাঠ করতেন বাধা নেই। তবে নাপাকী অবস্থায় গোসল করে কুর‘আন পাঠ করাই সর্বোত্তম।(দারুল ইফতা ফতোয়া বোর্ড;মাসিক আত তাহরিক।)

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password