ঘনিয়ে আসছে বিপদ ভুলভাল রিপোর্টে

ঘনিয়ে আসছে বিপদ ভুলভাল রিপোর্টে
MostPlay
কিছুদিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। উপসর্গ থাকায় তিনি নমুনা পরীক্ষা করালে ফলাফল নেগেটিভ আসে। কিছুদিন পর আবার পরীক্ষা করান, ফলাফল আবারও নেগেটিভ। রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে আসলে তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবার পরীক্ষা করে জানা গেল, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত! ততদিনে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে গেছে, কোভিড-১৯ ধরা পড়ার দু’দিনের মাথায় মারা যান ওই ব্যক্তি। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, এমনটা অহরহই ঘটছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও নমুনা পরীক্ষায় যাদের ফলাফল নেগেটিভ আসছে তারা সুস্থ মানুষের মতোই নিশ্চিন্তে মিশে যাচ্ছেন সবার সঙ্গে। এতে তার অজান্তেই মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এই মহামারি। বিশেষজ্ঞদের মত, এমনটা হতে থাকলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। ঘনিয়ে আসবে বড় ধরনের বিপদ। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আরটি-পিসিআর’ পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা শতভাগ নির্ভুল নয়, কিছুকিছু ক্ষেত্রে এটা ভুলভাল রিপোর্ট দিতে পারে। তবে যে পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সেখানে যদি কোনো গলদ থাকে তাহলে রিপোর্টে কখোনোই সঠিক তথ্যটা আসবে না। এছাড়া নমুনা কীভাবে নিয়ে আসা হল, কেমন ল্যাবে পরীক্ষা করা হল, এগুলোও একটা ফ্যাক্টর। রিপোর্টে করোনা ধরা পড়েনি অথচ উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন, এমন সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশে। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা রোগীর শরীর থেকে নমুনা নিচ্ছেন তারা যদি এ বিষয়ে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত না হন তাহলে ভুল রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রোগীর উপসর্গ যদি হালকা হয় তাহলে অনেক সময় নমুনায় ভাইরাস উঠে আসে না। অনেক সময় তাড়াহুড়ো করে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েও এই ভুল হতে পারে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার ক্ষেত্রে শরীরের তিন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়- নাক, গলা ও ফুসফুস থেকে। এক্ষেত্রে শতভাগ নির্ভুল ফল পাওয়া যায় ফুসফুসের ক্ষেত্রে। সাধারণত গলা থেকে নেওয়া নমুনা নিলে ভুল হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বিশেষ করে এটা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক সময় তাড়াহুড়ো করেন তাতে করে নমুনার সঙ্গে করোনার জীবাণু আসে না। এছাড়া যে ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেখানেও অনেক সময় গলদ থেকে যায়। এটা হতে পারে দক্ষ ল্যাবকর্মী ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে। এ নিয়ে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান তাহমিনা শিরীন বলেন, মানসম্মত ল্যাব এবং টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় পায়নি সরকার। তাছাড়া নতুন করে চালু করা ল্যাবগুলোতে আগে কখনো পিসিআরে পরীক্ষা করা হয়নি। এসব কারণেও ভুল রিপোর্ট আসছে অনেক সময়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password