আর্থিক হামলা চালিয়ে চীনকে মোকাবিলা করতে চাইছে ভারত

আর্থিক হামলা চালিয়ে চীনকে মোকাবিলা করতে চাইছে ভারত
MostPlay

অন্য কোনো উপায় না পেয়ে আপাতত আর্থিক খাতে ত্রিমুখী হামলা চালিয়ে চীনকে মোকাবিলা করতে চাইছে ভারত।ইতিমধ্যেই ৫৯টি চীনা মোবাইল অ্যাপ বাতিলের ঘোষণাকে ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে। জানা গেছে, সেটি আরও বর্ধিত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে ভারতে থাকা চীনা বিনিয়োগ পাল্টা উত্তরও দিতে পারে- এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতার প্রশ্নও।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, বুধবার বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর টুইটের হুমকি দিয়েছেন তাদের প্রতিপক্ষকে। তিনি লেখেন, “চীনা সোশ্যাল মিডিয়া উইবো ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বার্তা স্পষ্ট, লাল দাগ (ধৈর্যের সীমা) পেরোলে, তার ফলও ভুগতে হয়। সীমান্তে যা শুরু হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই বহু দিকে ডালপালাও ছড়িয়েছে। হয়তো এটা নেহাতই শুরু…”

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি জানিয়েছেন, ভারতের কোনো সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দরপত্রই দিতে পারবে না চীনা কোনো সংস্থা। এমনকি ভারতীয় কোনো সংস্থার সঙ্গে জোড় বেঁধেও তা করতে পারবে না। প্রয়োজনে খতিয়ে দেখা হবে পুরোনো প্রকল্প। নতুন করে দরপত্রও চাওয়া হতে পারে সে ক্ষেত্রে।

মন্ত্রীর দাবি হলো, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বদলানো হচ্ছে ওই সব টেন্ডারে যোগ দেওয়ার আর্থিক ও প্রযুক্তিগত শর্তও। যাতে করে নিজের জোরেই কাজ পেতে পারে ভারতীয় সংস্থাগুলো। ছোট-মাঝারি শিল্পেও চীনা সংস্থাগুলোকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।অপরদিকে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, বিদেশী অ্যাপের ওপরে নির্ভরতা বন্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। চীনা অ্যাপ সরে যাওয়ার সুযোগে ফাঁকা হওয়া বাজার ধরতে দেশী স্টার্ট-আপগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে।

চীনা সংস্থা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কারণে থার্মাল ক্যামেরা কেনার টেন্ডারও বাতিল করেছে দেশটির রেল মন্ত্রণালয়। চীনা সংস্থার সঙ্গে ফোরজি-অবকাঠামো গড়ার উপকরণও কেনার টেন্ডার বাতিলের পথে হাঁটছে দেশটির টেলিকম দফতর।

পত্রিকাটি আরও বলছে, মোদি সরকারের এই আক্রমণাত্মক আর্থিক নীতিতে এক দিকে যেমন ভারতীয় শিল্পমহলের একাংশের মধ্যে বাড়তি সুযোগ পাওয়ার আশা দানা বাঁধতে শুরু করেছে, তেমনই বইছে আশঙ্কার চোরা স্রোতও। প্রশ্ন উঠেছে যে, শুধু দেশীয় সংস্থাকে দিয়ে হাইওয়ে তৈরি করাতে গিয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও গুণমানের সঙ্গে আবার আপোস করতে হবে না তো? সুযোগ পাবে না তো শুধু গুটিকয়েক সংস্থা?

যে স্টার্ট-আপকে নিত্যনতুন অ্যাপ তৈরির ডাক দিয়েছেন মন্ত্রী, তাদের প্রথম সারির অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে চীনা বিনিয়োগ। গাড়ি বুক করার ওলা, অনলাইনে সহজে বিল পরিশোধের পেটিএম, বাড়িতে বসে খাবার অর্ডার দেওয়ার জোম্যাটো বা সুইগি, নিত্য বাজারের বিগ বাস্কেট বা ফ্লিপকার্ট, বাচ্চাদের পড়ার অ্যাপ বাইজুস হতে শুরু করে হোটেল বুকিংয়ের মেক মাই ট্রিপ- সব জায়গাতেই রয়েছে চীনা সংস্থার মোটা লগ্নি। এমন অবস্থায় চীন প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটলে, তাদের শেষ পর্যন্ত বেকায়দায় পড়তে হবে না তো? বিভিন্ন মহল হতে সেই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সময়ই বলে দেবে আসলে কি ঘটতে যাচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password