টাকার বিনিময়ে বখাটেদের হাতে তুলে দেয় এক নারী

টাকার বিনিময়ে বখাটেদের হাতে তুলে দেয় এক নারী
MostPlay

রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার মেয়েটি স্বাভাবিক হতে পারছে না। ঠিকমতো খেতে ও কথা বলতেও পারছে না।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ বলছে, অর্থের বিনিময়ে কৌশলে ডেকে নিয়ে তাকে বখাটেদের হাতে তুলে দেয় এক নারী।
এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলায় শিল্পী আক্তার নামের ওই নারী এবং জালাল বাবু নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিল্পী আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) খন্দকার রেজাউল হাসান গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই কিশোরীকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করা করা হয়। আর এই পরিকল্পনার নেপথ্যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে গ্রেপ্তার হওয়া শিল্পী। সে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক অপরাধীচক্রের সদস্য। সে-ই মূলত মেয়েটিকে তিন বখাটের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শিল্পী বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় এমন আরো অনেক অপরাধকাণ্ডে জড়িত থাকায় এর আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিল।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র ও সরেজমিনে বিমানবন্দর স্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিল্পী ও তার সহযোগীরা বিমানবন্দরকেন্দ্রিক ভাসমান বা ভবঘুরে নারী-কিশোরীদের নিশানা করে অর্থের বিনিময়ে বখাটেদের হাতে তুলে দেয়।
বিমানবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) নূর মোহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে।
এর মধ্যে শিল্পী ও জালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি ও তাকে ধর্ষণকারী সবাই বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় থাকে। গত শুক্রবার গভীর রাতে বিমানবন্দর সড়কসংলগ্ন কাওলা এলাকায় ঝোপের ভেতর নিয়ে ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। শনিবার সকালে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওসিসিতেই চলছে তার চিকিৎসা। প্রাথমিকভাবে মেয়েটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না তা ফরেনসিক পরীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ওসিসির সমন্বয়ক ডা. বিলকিস বেগম।
মেয়েটিকে যারা হাসপাতালে নিয়ে আসে তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের পরিচিত স্থানীয় রাজুসহ তিন বখাটে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে।
মেয়েটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। ওসিসির সমন্বয়ক ডা. বিলকিস বেগম জানান, মেয়েটিকে সুস্থ করার চেষ্ট চলছে।
তবে ওসিসি সূত্র জানায়, মেয়েটিকে শারীরিকভাবে সুস্থ করা গেলেও মানসিকভাবে সুস্থ করতে অনেক সময় লাগবে। সে ক্ষেত্রে তার দীর্ষস্থায়ী কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন আছে। এ ছাড়া সে যাতে পরিবারের সঙ্গে ভালো পরিবেশে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। কিন্তু সুস্থ হয়ে মেয়েটিকে আবার ফিরতে হবে বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায়, কারণ তার মা-বাবা সেখানেই থাকেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password