বাবা আমি শ্বাস নিতে পারছি না, ওরা ভেন্টিলেটর সরিয়ে দিয়েছে

বাবা আমি শ্বাস নিতে পারছি না, ওরা ভেন্টিলেটর সরিয়ে দিয়েছে
MostPlay

মৃত্যুর আগে হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ৩৪ বছরের কোভিড আক্রান্ত রোগীর তাঁর বাবাকে পাঠানো শেষ ভিডিয়ো বার্তা। যেখানে ওই রোগীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না...।’’ সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হতেই সামনে এসেছে বিষয়টি। সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, কোভিডের কবল থেকে বাঁচার জন্য ওই ব্যক্তির আকুতি। পাশাপাশি উঠছে হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও।

প্রবল জ্বর আসার পর ২৪ জুন হায়দরাবাদের ওই ব্যক্তিকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর বাবার অভিযোগ, সে দিন একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল তাঁর ছেলেকে ভর্তি নেয়নি। তার পরই ওই সরকারি হাসাপাতালে ছেলেকে ভর্তি করেন তিনি। শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে বাবাকে একটি ভিডিয়ো পাঠান ওই রোগী। যদিও শুক্রবার ছেলের সেই শেষ ভিডিয়ো দেখতে পাননি তিনি। শনিবার ছেলের শেষকৃত্য করে বাড়ি ফেরার পর ভিডিয়োটি দেখতে পান তিনি।

শনিবার থেকেই ভিডিয়োটি ছড়াতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। কোভিডের চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগীদের যে বিভিন্ন অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে, ভিডিয়ো দেখে সে দিকেই আঙুল তুলছেন নেটাগরিকদের একাংশ। ভিডিয়োতে হাঁপাতে হাঁপাতে ওই ব্যক্তি বলছেন, ‘‘ওরা ভেন্টিলেটর সরিয়ে দিয়েছে। তিন ঘণ্টা ধরে আমি অক্সিজেন দিতে বলছি। আমার হৃদ্‌পিণ্ড বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমি শ্বাস নিতে পারছি না। বিদায় বাবা, বিদায় সকলকে।’’

এই ভিডিয়ো নিয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে ওই ব্যক্তির বাবা বলেছেন, ‘‘আমি ছেলের শেষকৃত্য করে বাড়ি ফেরার পর ওই ভিডিয়ো দেখেছি। আমার ছেলে সাহায্য চাইছিল, কিন্তু কেউ তাঁকে বাঁচায়নি। কেন আমার ছেলে অক্সিজেন পেল না?’’ ভিডিয়োটি দেখার পর তাঁর হৃদয় যে ছারখার হয়ে যাচ্ছিল সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তবে এই অভিযোগ মানতে চাননি ওই হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট মেহবুব খান। তিনি বলেছেন, ‘‘রোগীর অক্সিজেন চালু ছিল। কিন্তু তাঁর অবস্থা এতটাই সঙ্কটজনক ছিল যে, তিনি সেটা বুঝতে পারেননি।’’ শেষ কয়েক দিনে ওই হাসপাতালে বেশ কয়েকটি এ রকম ঘটনা ঘটেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘বয়স্করা ফুসফুসে সংক্রমিত হয়ে এ রকম আকস্মিক ভাবে মারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ ক’দিনে ২৫-৪০ বছর বয়সিদেরও হৃদ্‌পিণ্ড কাজ বন্ধ করায় মৃত্যু হচ্ছে। আমরা তাঁদের অক্সিজেন চালু রেখেছিলাম। কিন্তু তাঁদের মনে হচ্ছিল, পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন তাঁরা পাচ্ছেন না।’’ এই ঘটনায় চিকিৎসকদের কোনও গাফিলতি নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বিগত কয়েক দিনে লাফ দিয়ে দিয়ে বেড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রোজ গড়ে হাজারের কাছাকাছি ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছেন সেখানে। যার জেরে মোট আক্রান্তের নিরিখে মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানাকে টপকে উপরে উঠে এসেছে এই রাজ্য। সেখানে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মোট মৃত্যু বাড়তে বাড়তে ২৫০ গণ্ডি পার করেছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password