মৃত্যুর আগে করোনার ভ্যাকসিন রেখে গেলেন বিজ্ঞানী

মৃত্যুর আগে করোনার ভ্যাকসিন রেখে গেলেন বিজ্ঞানী
MostPlay

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। যদিও এটি বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের প্রয়াত এক বিজ্ঞানীর পরিবার দাবি করেছে, ওই বিজ্ঞানীর আবিষ্কার করা একটি ভ্যাকসিন (টিকা) করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হতে পারে।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে শতাধিক দেশে। বিশ্বের প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজারের মতো মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কাছে এই সংবাদ আশাপ্রদ মনে হলেও, গবেষকরা এ ব্যাপারে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।

বিজ্ঞানী এরিক ওয়ার্লো ২০১৪ সালে ৮৪ বছর বয়সে মারা যান। তবে এর আগে তিনি গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার রেখে গেছেন বলে পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে।

তার মেয়ে জেন (৬৫) জানিয়েছেন, এরিক এইচ-৫এন ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক হিসেবে বেসরকারি বিনিয়োগে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছিলেন, যা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যবহার করা যেতে পারে। দাবি করা হচ্ছে, ভ্যাকসিনটি মানুষের ক্ষেত্রে একটি উপযুক্ত টিকা হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।

ভ্যাকসিন বিজ্ঞানী হিসেবে অবসর নেওয়া ওয়ার্লো মৃত্যুর আগে তাঁর গবেষণা এবং ফলাফল নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। এটি পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। তার পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গবেষণাপত্রটি ইতোমধ্যেই পাঠিয়েছেন। কারণ তারা মনে করছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করা ভ্যাকসিন মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস নির্মূলে সহায়ক হবে।

জেন বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞানী নই বা আমরা কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা ফার্মাসিউটিক্যালস সংস্থার সঙ্গে যুক্ত নই। বর্তমানে ইতোমধ্যে যেখানে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির নানা পদ্ধতি এবং পরীক্ষায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে,  সেখানে এই গবেষণাটি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কঠিন হবে বলে ধারণা করছি। কিন্তু বৈশ্বিক জরুরি পরিস্থিতির এই মুহূর্তে আমরা মনে করি, করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন সমস্যার দ্রুত, সহজ এবং দরকারি সমাধান হতে পারে কিনা তা দেখার জন্য সত্যিই এ ভ্যাকসিনে নজর দেওয়া উচিত।’

জেনের মতে, ভ্যাকসিনটির প্রধান এবং অনন্য সুবিধা হলো- এটি নাকে ড্রপের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়, যা নাক এবং ফুসফুস রক্ষার প্রথম সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এবং স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিকালীন সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করা সহজ এবং এর আগে ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করাও হয়েছিল। পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলও খুব সফল ছিল।

এছাড়া আরেকটি অপ্রত্যাশিত এবং অনন্য প্রভাব হচ্ছে-ইতোমধ্যে সংক্রমণ উপসর্গ দেখানো পাখিগুলোর মধ্যে এই রোগের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছিল ভ্যাকসিনটি।

মৃত্যুর কিছুদি আগে বিজ্ঞানী ওয়ার্লো ভ্যাকসিনটি পরিচালনা পদ্ধতির আরেকটি উপায় লিখেছিলেন। সেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, কীভাবে এটি ‘অভূতপূর্ব নিরাময়’ প্রভাব ফেলেছিল।

জেন বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুভার্বের আগে তার বাবা এমন কিছু ঘটতে পারে ধারণা করেছিলেন। কিন্তু হতাশ হয়েছিলেন যে তিনি তার ভ্যাকসিনের জন্য কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। মৃত্যুর ঠিক আগে তিনি ভ্যাকসিনটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং ব্যবহারের চূড়ান্ত উপায় তার ছেলে ও মেয়ে জন্য রেখে গেছেন।

বিজ্ঞানী ওয়ার্লো জীবদ্দশায় ইউএন ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন এবং ইউকে ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টে ভ্যাকসিন টেকনোলজিস্ট হিসেবে ৫০ বছর কাজ করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password